ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেবেন না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের পুরো ফলাফল প্রকাশ হওয়ার আগেই করবিন পদত্যাগের এমন আভাস দিলেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে লেবারের ভরাডুবির ইঙ্গিত আসার পর দলের করবিনবিরোধীরা পরাজয়ের জন্য তাঁর নেতৃত্বকে দায়ী করতে শুরু করেন। যদিও নির্বাচনের ফলাফল বলছে, ব্রেক্সিটবিরোধী অবস্থানের কারণে ঐতিহ্যগতভাবে লেবার ভোটাররা এবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, যাঁরা ২০১৬ সালের গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।
২০১৫ সালে লেবার দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে করবিন যুক্তরাজ্যে বামধারার রাজনীতির নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন। ২০১৭ সালের নির্বাচনে পানি, বিদ্যুৎ, রেলওয়েসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় মালিকানায় ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অভিনব ইশতেহার ঘোষণা করে তিনি রাজনীতিতে নতুন চমক সৃষ্টি করেন। এবারের নির্বাচনে করবিন আরও উদার ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন।
৭১ বছর বয়সী জেরেমি করবিন ১৯৮৩ সাল থেকে লন্ডনের ইজলিংটন আসনের এমপি। এবারের নির্বাচনেও তিনি বড় ব্যবধানে বিজয় পেয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৩৪ হাজার ৬০৩। আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী নিক ওয়েইলিং পেয়েছেন ৮ হাজার ৪১৫ ভোট।
বিজয়ী ভাষণে করবিন নিজ আসনের ভোটারদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, যে ফলাফলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তা হতাশাজনক। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে লেবার যে ইশতেহারের দিয়েছে সেটি আশা জাগানিয়া, কল্যাণমূলক এবং বৈষম্য দূরীকরণের জন্য। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব যে হুমকির মুখে পড়েছে তা মোকাবিলার জন্য অর্থনীতি ঢেলে সাজানোর কথা বলেছে লেবার। এসব ইশতেহার মানুষ পছন্দও করেছে। তবে ফলাফলের ইঙ্গিত থেকে এটা স্পষ্ট, সব ছাপিয়ে মানুষের মনে ব্রেক্সিট ইস্যু আধিপত্য বিস্তার করেছে।
করবিন বলেন, ফলাফল নিয়ে লেবার দলকে ভাবতে হবে। ভবিষ্যতে দল কীভাবে চলবে তা নিয়ে নতুন করে নীতি গ্রহণ করতে হবে। তবে লেবার দলের ইশতেহারগুলো হারিয়ে যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। ইজিলিংটন ইস্ট আসনের এমপি হিসেবে দায়িত্ব অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন করবিন।
করবিন বলেন, পার্লামেন্ট ও পার্লামেন্টের বাইরে মানুষের অধিকার আদায় এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্রিয় থাকবেন তিনি।
ইতিমধ্যে ৬৫০টি আসনের মধ্যে সাড়ে ৩০০ আসনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে কনজারভেটিভরা লেবার থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ৩৪ আসন। অন্যদিকে লেবার হারিয়েছে নিজেদের ৪২ আসন।