যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন ১০ জন। গত সোমবার আনুষ্ঠানিক মনোনয়নপত্র জমার দিনে আলোচিত ১১ প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র স্যাম গাইমা শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।
মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট, সাবেক ব্রেক্সিট-বিষয়ক মন্ত্রী ডোমিনিক রাব, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকোক এবং পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল গোভ। এঁরা প্রত্যেকেই চূড়ান্ত তালিকায় আছেন।
অন্য প্রার্থীরা হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন, সাবেক চিফ হুইপ মার্ক হারপার, সাবেক কমন্স লিডার অ্যান্ড্রিয়া লিডসম, সাবেক কর্ম ও অবসর ভাতা-বিষয়ক মন্ত্রী এস্টার ম্যাকভি এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী রোরি স্টুয়ার্ট। এসব প্রার্থীর কেউ কেউ আজ মঙ্গলবার নিজ নিজ ইশতেহার ঘোষণা করেন। তবে প্রার্থীরা ব্রেক্সিটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গণমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি অবস্থান তুলে ধরছেন বেশ আগ থেকেই।
ব্রেক্সিট নিয়ে দলীয় গৃহবিবাদের জের ধরে কনজারভেটিভ দলের নেতৃত্ব ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। যে কারণে কনজারভেটিভ দলে এই নতুন নেতা নির্বাচন। নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দলের নেতাই হন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে নতুন নেতার কাছে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন মে। তাই প্রার্থীদের সামনে বিশেষ সুযোগ—শুধু দলীয় ভোটে উতরে যেতে পারলেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
তবে কনজারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া অত সহজ নয়। প্রথম ধাপে ১৩, ১৮, ১৯ ও ২০ জুন দলীয় আইনপ্রণেতারা ভোট দেবেন। দলটির ৩১৩ জন আইনপ্রণেতা দফায় দফায় ভোট দিয়ে প্রার্থী সংখ্যা দুইয়ে নামিয়ে আনবেন। এতে প্রতি পর্বে সবচেয়ে কম ভোট পাওয়া প্রার্থী বাদ পড়বেন। দলটির সাম্প্রতিক পরিবর্তিত নিয়ম অনুযায়ী প্রথম রাউন্ড পার হতে কমপক্ষে ১৬ জন আইনপ্রণেতার সমর্থন লাগবে। আর দ্বিতীয় রাউন্ড পার হতে লাগবে ৩২ ভোট।
সর্বশেষ টিকে থাকা দুই প্রার্থী হাজির হবেন দলটির তৃণমূল সদস্যদের সামনে। সদস্যদের কাছে ভোট চাওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিতে হবে। দলটির প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার সদস্যের ভোটে নির্ধারিত হবেন নতুন নেতা। জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে ঘোষিত হবে ফলাফল।
বিবিসির বেন রাইট বলছেন, আগামী নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করতে পারবেন, নিজেদের আসনগুলো রক্ষা করতে পারবেন, এমন প্রার্থীকেই প্রাধান্য দেবেন কনজারভেটিভ দলের আইনপ্রণেতারা। তাই দেশের নিত্য বিষয়গুলোতে নতুন প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান কী, সেটি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না।
শুরু থেকে আলোচিত বরিস জনসন ধনীদের বড় ধরনের কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তুমুল বিতর্ক ছড়িয়েছেন। ২০১৬ সালের নেতা নির্বাচনে জনসনের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো মাইকেল গোভ এবারও তাঁর প্রতি কামান দাগিয়েছেন। জনসন এখনো গণমাধ্যম কিংবা জনগণের মুখোমুখি হাজির হননি। তাই জনসনকে ইঙ্গিত করে গতকাল সোমবার গোভ বলেন, বাঙ্কারে বসে দেওয়া অবাস্তব প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করলে ভুল হবে।