করোনার টিকা, চিকিৎসা, শনাক্ত ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এখনও ১৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দরকার ।
করোনার টিকা, চিকিৎসা, শনাক্ত ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এখনও ১৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দরকার ।

টিকাযুদ্ধে তহবিলের অর্ধেকই ঘাটতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বৈশ্বিক পর্যায়ে করোনার টিকা, চিকিৎসা, শনাক্ত ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য তহবিল জোগানোর আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু সংস্থাটির এখনো প্রয়োজনীয় তহবিলের অর্ধেকই ঘাটতিতে। তাদের এখনো ১৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। গত মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ধনী ও গরিব দেশগুলোর মধ্যে বৈষম্য বাড়ার মধ্যেই তহবিল সংকটের এ তথ্য জানানো হলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সতর্ক করে বলেছেন, মহামারিটি ১৮ মাসের বেশি সময় ধরে খুব বিপজ্জনক দশায় রয়ে গেছে।

তেদরোস মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, যেসব দেশ এখন তাদের দেশে বিধিনিষেধ শিথিল করছে, তারা ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম, পরীক্ষা, অক্সিজেন এবং বিশেষত টিকার মতো জীবনরক্ষার সরঞ্জামকে ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে।

তেদরোস আরও বলেন, যেসব দেশে জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জামের যথেষ্ট সরবরাহ নেই, তারা হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঢেউয়ের মুখোমুখি হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অ্যাকসেস টু কোভিড টুলস অ্যাকসেলেরেটর (এসিটি-এ) কর্মসূচির মাধ্যমে ১৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল এ বছরের মধ্যে পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। কিন্তু এ কর্মসূচির মাধ্যমে আরও প্রায় ১৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থ জরুরি ভিত্তিতেই প্রয়োজন।
এসিটি-এ কর্মসূচির মাধ্যমেই কোভ্যাক্স নামের উদ্যোগটির সৃষ্টি হয়, যার মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোতে টিকা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এএফপির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এখন পর্যন্ত ২১৬টি দেশ ও অঞ্চলে ৩২৫ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে প্রতি ১০০ জনে ৮৪ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের ২৯টি দেশে প্রতি ১০০ জনে মাত্র ১ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

কোভ্যাক্স মঙ্গলবার জানিয়েছে, বিশ্বের ১৩৫টি অঞ্চলে ১০ কোটি টিকা দেওয়ার মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। কিন্তু এ পর্যায়ে তা ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডোজ হওয়ার কথা ছিল বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সোম্য স্বামীনাথান।

কোভ্যাক্সের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে টিকার আরও ডোজ পাওয়া যাবে। তখন আরও টিকা এ উদ্যোগের মাধ্যমে দেওয়া হবে। বর্তমানে কোভ্যাক্স অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ওপর অধিকাংশ নির্ভরশীল। তেদরোস চাইছেন সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিটি দেশে ১০ শতাংশ এবং এ বছরের মধ্যে অন্তত ৪০ শতাংশ টিকাদান সম্পন্ন হোক।

টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফাইজারের চেয়ারম্যান অ্যালবার্ট বোরলা বলেছেন, ‘তাঁর প্রতিষ্ঠান নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর জন্য আগামী দেড় বছরের মধ্যে ২০০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে। তিনি বলেন, সুড়ঙ্গের শেষে আলো দেখতে পাচ্ছি।’

এদিকে জনসন অ্যান্ড জনসনের প্রধান বিজ্ঞানী পল স্টোফেলস বলেছেন, তাঁদের এক ডোজের জনসন অ্যান্ড জনসন টিকার প্রথম চালান চলতি সপ্তাহে কোভ্যাক্সকে দেওয়া হচ্ছে।