সবচেয়ে বেশি অনুসারীর (ফলোয়ার) দৌড়ে এবার নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিকটক। সেনেগাল বংশোদ্ভূত ২২ বছর বয়সী খাবি লামে ছাড়িয়ে গেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী চার্লি ডি’অ্যামেলিওকে। বর্তমানে লামের অনুসারীর সংখ্যা ১৪ কোটি ২৭ লাখ। আর চার্লি ডি’অ্যামেলিওর অনুসারী ১৪ কোটি ২৩ লাখ। খবর দ্য ভার্জের।
ইতালিতে বসবাস লামের। টিকটকের ‘ডুয়েট’ ও ‘স্টিচ’ ফিচার ব্যবহার করে পরিচিতি পান তিনি। অন্য টিকটকারদের দেখানো কঠিন কাজগুলো সহজভাবে করার উপায় দেখিয়ে দিয়ে জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছান তিনি।
নির্বাক মজার ভিডিও আপলোড করে লাখো ভিউ ও লাইক পান লামে। গত বছর ও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তাঁর অনুসারীর সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা যায়। লামেকে এক নম্বর করতে অনুসারীরা উদ্যোগী হন।
অবশেষে বুধবার রাতে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসে। চার্লি ডি’অ্যামেলিও ও তাঁর বোন ডিক্সিকে সরিয়ে শীর্ষস্থান দখল করেন লামে। টিকটকের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র এই দুই বোন। দুজনে মিলে সম্পূর্ণ একটি মিডিয়া ব্র্যান্ড তৈরি করে ফেলেছেন। অবশ্য এই তারকাখ্যাতি কাকতালীয়ভাবে হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তাঁরা।
টিকটকে কয়েক সেকেন্ডের নাচের ভিডিওর মাধ্যমে উল্কাগতিতে দুই বোনের খ্যাতির উত্থান মানুষকে বিস্মিত করে। কেবল তা–ই নয়, লাখো অনুসারীকে তাঁদের মতো করে কাজটি করতে উৎসাহিত করে। ফোর্বসের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দুই বোন ২৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন।
এ প্ল্যাটফর্মে অতীতে টিকটকারদের আনা জীবনযাপন–সম্পর্কিত জটিল বিষয়গুলো সহজ করে উপস্থাপন করে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন লামে। বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ নির্মাতাদের এই প্ল্যাটফর্মে কীভাবে নেওয়া হচ্ছে, সেটিও উঠে আসে তাঁর জনপ্রিয়তার মাধ্যমে।
২০২০ সালে অভিযোগ ওঠে, টিকটক অ্যালগরিদম কৃষ্ণাঙ্গ নির্মাতাদের ভিডিও প্রচারে প্রতিকূল আচরণ করছে। তখন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার করে কোম্পানি। এর মধ্যে ছিল বৈচিত্র্য পরিষদ গঠন এবং কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়কে সাহায্যকারী অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান।
উত্তর ইতালির শহর কিবাসোর এক কারখানায় কাজ করতেন খাবি লামে। তবে গত বছর করোনাকালের শুরুতে কাজটিও হারান। এরপর ফিরে যান মা-বাবার ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে। বাবা বারবার নতুন কাজ খুঁজতে বললেও খাবি পড়ে রইলেন টিকটক নিয়ে। একের পর এক ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করা শুরু করেন ‘খাবি লামে’ নামে।
শুরুর দিকে ভিডিওগুলো অবশ্য নির্বাক ছিল না। ইতালীয় ভাষায় তৈরি ভিডিওগুলোতে ইতালীয় সাবটাইটেল যোগ করতেন। তবে নির্বাক ভিডিও দিয়েই পৌঁছান মানুষের কাছে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লামে বলেন, তাঁর চেহারা ও অভিব্যক্তিই মানুষকে হাসায়। নিজের নির্বাক ভাব প্রকাশকে ‘সর্বজনের ভাষা’ বলেও অভিহিত করেন তিনি।
টিকটকের ক্রিয়েটর ফান্ডের মাধ্যমে আয় করা শুরু করেছেন লামে। আবার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গেও যুক্ত হচ্ছেন। অনেক জনপ্রিয় তারকার সঙ্গে যৌথ ভিডিও বানানোর প্রস্তাব পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।