মাদক পাচারের দায়ে অস্ট্রেলিয়ার এক নাগরিককে চীনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের এক মুখপাত্র আজ শনিবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ওই অস্ট্রিলীয়র নাম কারম গিলস্পি। মাদক পাচারের দায়ে ২০১৩ সালে তাঁকে চীনের গুয়াংঝোউ বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল সেখানকার পুলিশ।
গিলস্পির এই ফাঁসির আদেশ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সরকার এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাঁর মামলার রায় শুনে আমরা অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়া সব ক্ষেত্রেই মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে।’
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, মোট সাড়ে সাত কেজি মেথামফেটামিন পাচারের চেষ্টা করছিলেন কারম গিলস্পি। ঘটনাটি ২০১৩ সালে সেভাবে খবরে না এলেও এবার নতুন করে শুরু হয়েছে এর আলোচনা৷ কারণ, অস্ট্রেলিয়া–চীনের সম্পর্ক চরম তিক্ত অবস্থায় রয়েছে বর্তমানে। গত এপ্রিলে করোনাভাইরাসের উৎস সম্পর্কে স্বাধীন নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করার পর থেকে চীন একধরনের বাণিজ্যযুদ্ধ ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া থেকে রপ্তানি করা বার্লির ওপর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কর বসিয়েছে চীন। স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়া থেকে মাংস আমদানি। তারপর চীনা পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ না করতে সতর্কতা জারি করে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে না আসার সতর্কবার্তা দিয়েছে চীন। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কোনো নাগরিকের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে চীন সরকারের মাদক চোরাচালানের কঠোর অভিযানের সময় কারম গিলস্পিকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের বাসিন্দা ইব্রাহিম জাল্লোহকে মাদক পাচারের দায়ে চীনের কম্যুনিস্ট সরকার মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। পরে আদেশ পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এর আগে গত বছর চীনা কর্তৃপক্ষ ২২২ কেজি মাদক পাচারের জন্য কানাডিয়ান নাগরিক রবার্ট লয়েড শেলেনবার্গকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তখন অস্ট্রেলিয়ার সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন বার্মিংহাম চীনের মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছিলেন।