ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে তদন্ত শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড। আজ সোমবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।
জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, নিউজিল্যান্ডের রয়্যাল কমিশন তদন্ত সংস্থা বিষয়টি দেখভাল করবে। সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর কর্মকাণ্ড, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ধরনসহ ঘটনা মোকাবিলায় দেশটির কাউন্টার টেররিজম রিসোর্সের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, এসবও তদন্ত করে দেখবে রয়্যাল কমিশন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে আরডার্ন বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডে যেন এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করতে এই কমিশনের তদন্ত ফলাফল ভূমিকা রাখবে।’
রয়্যাল কমিশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, তদন্তের জন্য আগস্ট পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করবে তারা। তদন্ত শেষে পাওয়া ফলাফল ১০ ডিসেম্বর জমা দেওয়া হবে।
এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে বৈঠক করতে এই মুহূর্তে প্যারিসে আছেন জেসিন্ডা আরডার্ন। অনলাইনে সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের বিস্তার রোধ করতে বিশ্বনেতা ও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করতে চলেছেন আরডার্ন, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রাইস্টচার্চ কল’। গত শনিবার নিউইয়র্ক টাইমসে লেখা এক কলামে আরডার্ন বলেছেন, বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে প্রাথমিক পদক্ষেপ সংবলিত একটি কাঠামো দাঁড় করাতে সহায়তা করবে এই ‘ক্রাইস্টচার্চ কল’।
তবে এই চুক্তির কারণে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিঘ্নিত হবে না, এমন নিশ্চয়তাও দিয়েছেন আরডার্ন। নিজের কলামে তিনি লিখেছেন, এই চুক্তির কারণে কারও বাকস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে না।
ফেসবুক, গুগল, টুইটারসহ বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধি এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও ফেসবুকের প্রধান মার্ক জাকারবার্গ উপস্থিত থাকবেন না বলে নিশ্চিত করেছেন। জাকারবার্গের বদলে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাজ্যের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে ফেসবুকের আন্তর্জাতিক ও যোগাযোগ বিভাগের সহসভাপতি নিক ক্লেগ। এই বৈঠকের ব্যাপারে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ক্লেগ বলেছেন, ‘বিশ্বনেতা, সরকার ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এই বৈঠকে আমাদের আলোচনা হবে। মানুষকে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলির কাঠামো দাঁড় করাতে আলোচনায় বসব আমরা।’
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা।