বিচিত্র

করোনার ভয়ে শিক্ষকের কাণ্ড

প্রতীকী ছবি

করোনা মহামারিতে বিদ্যালয় বন্ধ। তবে বন্ধের আগে একজন শিক্ষক বিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে পানি সরবরাহের কল খুলে রেখে যান। আর তাতেই বাধে বিপত্তি। কয়েক মাস বন্ধ থাকা বিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে কল থেকে অনবরত পানি পড়তে থাকে। এর খেসারত দিতে হয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। পানির বিল এসেছে ২৭ হাজার ডলার (সাড়ে ২৩ লাখ টাকা)।

ঘটনাটি ঘটেছে জাপানের কানাগাওয়া অঞ্চলের ইকোসুকা শহরের একটি বিদ্যালয়ে। তবে ওই শিক্ষক ভুলে পানির কল খুলে রেখেছিলেন, বিষয়টি এমন নয়। ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছেন তিনি। তাঁর ধারণা ছিল, পরিষ্কার পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখতে পারলে বিদ্যালয়ের সুইমিংপুল করোনামুক্ত থাকবে। এ চিন্তা থেকে তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। তবে ওই বিদ্যালয় ও শিক্ষকের নাম–পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এ বিষয়ে স্থানীয় শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা আকিরা কোজিরি এএফপিকে বলেন, সাধারণত সুইমিংপুলের পানির মান নিয়ন্ত্রণে ক্লোরিন ও ফিল্টার মেশিন ব্যবহার করা হয়। তবে ওই বিদ্যালয়ের সুইমিংপুল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষক ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করতেন। তিনি কোথা থেকে যেন শুনেছেন, পরিষ্কার ও নতুন পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখলে করোনা থেকে দূরে থাকা যায়। এটি মোটেও বাস্তবসম্মত নয়।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাঁদের একজন সহকর্মী দেখেছিলেন কল থেকে অনবরত পানি পড়ছে। তিনি কলটি বন্ধ করে দেন। কিন্তু সুইমিংপুল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষক আবারও কলটি খুলে দেন। এর ফলে গত বছরের জুন মাসের শেষভাগ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ওই কল থেকে অনবরত পানি পড়েছে। এর দায় ভোগ করতে হয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।

আকিরা কোজিরি জানান, ওই শিক্ষকের ভুল ধারণার কারণে বিদ্যালয়টিতে মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময়ে অতিরিক্ত চার হাজার টন পানি ব্যবহৃত হয়েছে। এই পরিমাণ পানি দিয়ে বিদ্যালয়টির সুইমিংপুল ১১ বারের বেশি পূর্ণ করা যেত।

ঘটনাটি জানাজানি হয় পানির বিল হাতে পাওয়ার পর। কানাগাওয়ার আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ ওই বিদ্যালয়ের পানির বিল ধরেছে ৩৫ লাখ ইয়েন (স্থানীয় মুদ্রা) বা ২৭ হাজার মার্কিন ডলার। কর্তৃপক্ষের মতে, বাড়তি এ বিল সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই তত্ত্বাবধানকারীকে পরিশোধ করতে হবে।

এক বিবৃতিতে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছে ইকোসুকা শহর কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, এই ঘটনায় শহরের আর্থিক লোকসান হয়েছে। এ জন্য শহরবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছে তারা। তবে ওই শিক্ষক পানির বিল পরিশোধ করেছেন কি না কিংবা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে শাস্তি দিয়েছে কি না, সেটা জানা যায়নি।