করোনা মহামারি ঠেকানোর বৈশ্বিক দৌড়ে শামিল হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থার পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, এটি কোভিড-১৯–এর সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পরীক্ষার প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। দুটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন নিয়ে মেলবোর্নের কাছে একটি পরীক্ষাগারে কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (সিএসআইআরও) প্রাক-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা শুরু হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ের এ পরীক্ষা সম্পন্ন হতে তিন মাস সময় লাগবে বলে জানান সিএসআইআরওর স্বাস্থ্য পরিচালক রব গ্রেনফেল। তবে তিনি বলেন, আগামী বছরের শেষ নাগাদ ছাড়া কোনো ভ্যাকসিন হাতে পাওয়া যাবে না।
গ্রেনফেল বলেন, ‘সাধারণ গ্রাহকদের হাতে ভ্যাকসিন তুলে দিতে ১৮ মাস সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। অবশ্যই এর পরিবর্তন হতে পারে। কারণ, আমাদের অনেকগুলো কারিগরি বাধা দূর করে এগোতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার এ গবেষক বলেন, বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন। মাত্র ৮ সপ্তাহে প্রাক-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা স্তরে চলে এসেছে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই দুই বছর পর্যন্ত সময় লাগে।
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬০৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৪৬ হাজার ৮০০ জন। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্ত এখন দুই লাখের বেশি মানুষ। রয়টার্স জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন ৫ হাজার ২০০ জন ও ২৪ জন মারা গেছেন।
গ্রেনফেল বলেন, তাঁদের তৈরি করোনাভাইরাসের দুটি ভ্যাকসিন এ মাসের শেষের দিকে বা আগামী মাসের শুরুতে মানবদেহে প্রয়োগ শুরু হবে।
সিএসআইআরও বলেছে, পরীক্ষায় ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করে দেখা হবে এবং উন্নত সুরক্ষার জন্য ইনজেকশন ও নাকের স্প্রে তৈরি করা হবে।
চীনের বাইরে সিএসআইআরও একমাত্র গবেষণা সংস্থা, যারা পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসে আলাদা সংস্করণ তৈরি করতে পেরেছে এবং কোভিড-১৯–এর প্রাক-ক্লিনিক্যাল গবেষণা চালাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানা মানুষের ওপর কোনো ভ্যাকসিন পরীক্ষা চালিয়েছে। গত মাসে সিয়াটলে এ পরীক্ষা শুরু হয়। মার্কিন সরকার মর্ডানা, জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গে প্রচুর ভ্যাকসিন তৈরিতে চুক্তি করেছে। এর বাইরে আরও দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে।
মঙ্গলবার রয়টার্সকে একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল তাদের একটি বায়ো-কেমিক্যাল পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯–এর ভ্যাকসিনের প্রটোটাইপ ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করছে।
অস্ট্রেলিয়া গত সপ্তাহে কয়েক হাজার স্বাস্থ্যকর্মী কলেরা ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসে কাজ করে কি না, সে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।