মিয়ানমার সরকার দাবি করেছে, আত্মরক্ষার জন্যই উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য কাচিনে জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়।ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক উদ্বেগের মুখে শক্তি প্রয়োগ থেকে যত দূর সম্ভব বিরত থাকার অঙ্গীকার করেছে মিয়ানমার। এর আগে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র ওই হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।স্থানীয়ভাবে তাতমাদাউ নামে পরিচিত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) মধ্যে চলা লড়াই সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বেড়েছে। এক বিবৃতিতে দেশটির সংস্কারবাদী সরকার ওই বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রেললাইন, সড়ক ও সেতু উড়িয়ে দেওয়া, সেনাসদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো এবং স্থানীয় লোকজনকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছে।বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার স্বার্থেই তাতমাদাউকে (সেনাবাহিনী) ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। তা ছাড়া জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা, নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ পরিবহনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ওই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যেও তারা ব্যবস্থা নেয়।’ এতে আরও বলা হয়, যদিও সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নিয়েছে, তার পরও তারা শক্তি প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।১৭ বছরের যুদ্ধবিরতির পর গত বছর কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর নতুন করে লড়াই শুরু হয়। স্থানীয় অধিবাসীদের অনেকেই ইতিমধ্যে পালিয়ে কাচিন ও চীন সীমান্তের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ রাজ্যটিতে নতুন করে লড়াই শুরুর পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে।জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বরাবরই বিদ্রোহীদের ওপর বেপরোয়া সামরিক অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েআসছে।বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের ওপর উৎপীড়ন ও কাচিন বিদ্রোহীদের ওপর হামলার ঘটনা মিয়ানমার সরকারের সাম্প্রতিক গণতন্ত্রবান্ধব কার্যক্রমকে অনেকটাই ফিকে করে তুলছে। এএফপি।