অস্ট্রেলিয়া থেকে রপ্তানিকৃত বার্লির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপাচ্ছে চীন। ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে উঠছে । চীন বলছে, অস্ট্রেলিয়া থেকে রপ্তানি করা বার্লি বা যবের ওপর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হবে।
স্বল্পমূল্যের আমদানি পণ্য দেশীয় পণ্য উৎপাদনের ক্ষতি করছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত শুরু হয়েছিল ১৮ মাস আগে। অভিযোগ, অস্ট্রেলিয়া ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ দামের চেয়ে কম দামে এই বার্লি চীনে রপ্তানি করছে। ফলে চীনের দেশীয় উৎপাদন মার খাচ্ছে চরমভাবে। তবে এই শুল্ক আরোপ চীন এমন সময় করতে যাচ্ছে যখন অস্ট্রেলিয়া চীনের কাছে করোনাভাইরাস বিস্তার ও উৎস সম্পর্কে আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছে।
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী সাইমন বার্মিংহাম এ নিয়ে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই পদক্ষেপে অস্ট্রেলিয়া গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।
অস্ট্রেলিয়া চীনের সবচেয়ে বড় বার্লি রপ্তানিকারক দেশ। দেশটির ৮৮ শতাংশ বার্লি রপ্তানি হয় চীনে। ২০১৭ সালে চীনে প্রায় সাড়ে ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন বার্লি রপ্তানি হয়, যার মূল্য ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। কিন্তু বেইজিং-এর ভর্তুকি দেওয়ার অভিযোগের পর রপ্তানি কমতে থাকে চীনে। কিন্তু এই আমদানি কর আরোপের পেছনে চীনের আরও উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মন্তব্য করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মনে করেন, চীনের হুয়াওয়ে কোম্পানির হাইটেক ৫জি নেক্সট জেনারেশন নেটওয়ার্ক স্থাপনে অস্ট্রেলিয়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় চীন অস্ট্রেলিয়ার ওপর ক্ষুদ্ধ। তার ওপর আবার করোনাভাইরাস তদন্তের দাবি করায় এই কর আরোপের ব্যবস্থা নিচ্ছে চীন। এর আগে করোনাভাইরাস নিয়ে অস্ট্রেলিয়া-চীন সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠলে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত চেং জিংয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছিলেন।
বেইজিং ক্যানবেরাকে ১০ দিনের ভেতরে কেন ৮০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি কর আরোপ করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে। তবে তদন্তের এই ১৮ মাসে কোনো চীনা কর্মকর্তা অস্ট্রেলিয়া আসেননি। হঠাৎ করেই এ ব্যাপারে সরব হয়ে উঠেছে চীনা সরকার।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, বার্লি আমদানিতে শুল্ক আরোপের বিষয়ে চীনের পরিকল্পনার সঙ্গে যদি করোনাভাইরাসের মহামারির তদন্তের বৃহত্তর কূটনৈতিক বিবাদের কোনো সংযোগ থাকে তাহলে তিনি 'অত্যন্ত মর্মাহত' হবেন।