অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে জেল-জরিমানা হওয়ার আইন রয়েছে। সে আইন আরও কঠোর হতে যাচ্ছে। নীতিমালা অমান্য করলে শুধু ব্যবহারকারীর নয়, জেলে যেতে হতে পারে মাধ্যমগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদেরও।
নতুন আইনের আওতায় ফেসবুক, টুইটার কিংবা গুগলের মতো মাধ্যমগুলো উগ্রপন্থী, জঙ্গিবাদ ও সহিংসতামূলক কনটেন্ট দ্রুত মুছে ফেলতে বাধ্য থাকবে। অন্যথায় দেশটির আদালত প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কারাবাসের শাস্তিও প্রদান করতে পারে। আজ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার এই প্রস্তাবিত আইন পেশ করেন। নিউজিল্যান্ডে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করেই এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫ জন বাংলাদেশিসহ ৫০ জন মানুষ নিহত হন। এ সময় হামলাকারী পুরো হত্যাকাণ্ডটি ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেন। আসল ভিডিওটি মুছে ফেলতে ফেসবুকের প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আর ততক্ষণে ভিডিওটি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুক জানায়, হামলার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ভিডিওটি ১৫ লাখের বেশিবার ফেসবুকে শেয়ার হয়। এ ছাড়া ভিডিওটি টুইটার, ইউটিউবসহ ইন্টারনেটের প্রায় সব মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে।
অস্ট্রেলিয়ার নতুন আইনের প্রস্তাব নিয়ে ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনায় বোঝা গেল, মাধ্যমগুলোর নিজেদের কনটেন্টের ওপর জুতসই নিয়ন্ত্রণ নেই, যেটা বিপজ্জনক। একজন ১০ বছরের অস্ট্রেলিয়ান শিশু ফেসবুকে প্রবেশ করতে পারে। আর ঢুকেই এক ভয়াবহ গণহত্যার সাক্ষী হতে পারত।’
বিশেষত ফেসবুকের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার আরও বলেন, ‘অপরাধ ঠেকাতে আমাদের ইতিমধ্যেই কঠোর আইন রয়েছে। আর সেখানে ফেসবুকের একটি এমন ভিডিও সরাতে ঘণ্টাখানেক লেগে যায়, যা আমাদের শিশুদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।’ ফেসবুক কিংবা ইউটিউবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
টেলিভিশন ও রেডিওর মতো কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে ব্যর্থ হলে মাধ্যমগুলোর প্রধানকে এমনকি জেলেও যেতে হতে পারে উল্লেখ করে ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার বলেন, ‘টেলিভিশন চ্যানেল যদি এমন গণহত্যার ভিডিও দেখানোর জন্য শাস্তি পাওয়ার আইনের আওতায় পড়ে, তবে ফেসবুক বা ইউটিউব কেন নয়!’ আইনটি শিগগিরই বাস্তবায়িত হবে বলে জানান পোর্টার।