যাযোগ্য মর্যাদায় ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশন।
২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় বাংলাদেশ হাউসে হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচির সূচনা করেন। পরে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে এবং ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় অটোয়ার সেন্ট অ্যান্থনিজ ব্যাংকুয়েট হলে হাইকমিশনারের সভাপতিত্বে হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় একটি আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে হাইকমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মিয়া মো. মাইনুল কবির, কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মো. শাকিল মাহমুদ ও প্রথম সচিব অপর্ণা রাণী পাল দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করে শোনান।
সভাপতির বক্তব্যে হাইকমিশনার বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ও পরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি একুশকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হিসাবে বর্ণনা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে কানাডার আইনসভায় বিল ’এস-২৪৭’ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, যা পাস হলে কানাডায় সরকারিভাবে ২১ ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপিত হবে। এ ক্ষেত্রে কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সংগঠন বিশেষত ‘বাংলা কারাভান’-এর জোরালো ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। তিনি টরন্টোতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগ একটি শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানান।
পরে স্থানীয় শিল্পীসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তাগণ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করে আমাণী, আলিয়া জামান, ওয়াজিদ জামান ও মাশরুর মাহিন কবির। পরে হাইকমিশনের কাউন্সেলর মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরী, নাদিরা হক, ফারাহ নাজ ও স্থানীয় অং সুয়ে থোয়াই, শিউলি হক, নার্গিস আক্তার রুবি, ডালিয়া ইয়াসমিন, গিয়াস ইকবাল সোহেল, নাসরিন শশী সংগীত পরিবেশন করেন। কবিতা আবৃত্তি করেন জুলফি সাদেক, শাহ বাহাউদ্দিন শিশির ও শিউলি হক। এ ছাড়া ভাষা আন্দোলনের ওপর স্বরচিত পুথি পাঠ করেন কাউন্সেলর মো. সাখাওয়াৎ হোসেন। আটোয়া নিবাসী সর্বস্তরের বাংলাদেশি ও স্থানীয় জনসাধারণ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। সব শেষে উপস্থিত সবার জন্য নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি