ল্যানসেটে গবেষণা নিবন্ধ

অক্সফোর্ডের টিকা নিরাপদ ও কার্যকর

অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা
ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকাটি নিরাপদ ও কার্যকর বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা আরও বলেছেন, টিকাটি করোনার সংক্রমণ ছড়ানো কমিয়ে আনে। এ ছাড়া করোনায় মৃত্যু কমিয়ে আনতেও এটি সহায়ক।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অক্সফোর্ডের টিকা পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট নন, এমন বিজ্ঞানীদের একটি দল টিকাটির মানবদেহে পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করেছেন। তাঁরা ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর চালানো পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পর্যালোচনা করেছেন। এই স্বেচ্ছাসেবকদের বেশির ভাগেরই বয়স ৫৫ বছরের কম। তবে পরীক্ষায় দেখা গেছে, টিকাটি প্রবীণদের ক্ষেত্রেও ভালো কার্যকর।

যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে অক্সফোর্ডের টিকাটি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের আবেদন করা হয়েছে। তবে টিকাটি নিয়ে এখনো কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, টিকাটি কত ডোজ প্রয়োগ করা হবে।

সম্প্রতি প্রকাশিত টিকাটির অন্তর্বর্তী ফলাফলে জানা গেছে, এটি সার্বিকভাবে ৭০ শতাংশ কার্যকর। টিকা পরীক্ষায় দেখা গেছে, এটি পূর্ণ মাত্রায় দুই ডোজ প্রয়োগ করলে সর্বনিম্ন ৬২ শতাংশ কার্যকারিতা দেখা গেছে। তবে প্রথম ডোজ অর্ধেক মাত্রায় এবং দ্বিতীয় ডোজ পূর্ণ মাত্রায় প্রয়োগ করলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত টিকাটি কার্যকর।

ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে জানানো হয়েছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৩৬৭ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে টিকাটির প্রথম ডোজ অর্ধেক মাত্রায় এবং দ্বিতীয় ডোজ পূর্ণ মাত্রায় প্রয়োগ করা হয়। এরপর দেখা গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে টিকাটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। স্বেচ্ছাসেবীদের মোট সংখ্যার তুলনায় দেড় ডোজ পাওয়া এই স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় টিকাটির মাত্রার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো কঠিন হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া ওই ১ হাজার ৩৬৭ জন স্বেচ্ছাসেবীর কেউই ৫৫ বছরের বেশি বয়সী নন।

নিরাপত্তা নিয়েও কিছুটা প্রশ্ন রয়ে গেছে। টিকা গ্রহণের পর একজন স্বেচ্ছাসেবীর ক্ষেত্রে গুরুতর ঘটনা ঘটেছে। অপর এক স্বেচ্ছাসেবীর প্রচণ্ড জ্বর উঠেছিল। এই বিষয়গুলো নিয়ে এখনো কাজ করছেন গবেষকেরা। দুজন স্বেচ্ছাসেবী ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার উপসর্গহীন সংক্রমণেও টিকাটি সুরক্ষা দিতে পারে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাসকেল সোরিয়ট বলেছেন, পরীক্ষার এই ফলাফল দেখাচ্ছে যে টিকাটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর। এটি নিরাপদ এবং সহনশীলও।