গ্রিনল্যান্ড
গ্রিনল্যান্ড

গ্রিনল্যান্ড কেন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ পেতে অর্থ খরচের পাশাপাশি প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের কথাও বলেছেন তিনি। আর তাই বর্তমানে বিশ্বরাজনীতিতে বেশ আলোচনায় রয়েছে গ্রিনল্যান্ড।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মাঝখানে থাকা গ্রিনল্যান্ড বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ হিসেবে পরিচিত। গ্রিনল্যান্ড ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন জলবায়ুবিজ্ঞানীরা।

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডেভিড হল্যান্ড জানিয়েছেন, গ্রিনল্যান্ডকে উষ্ণ পৃথিবীর জন্য খোলা রেফ্রিজারেটরের দরজা বা থার্মোস্ট্যাট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গ্রিনল্যান্ড জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। বিশ্বের বাকি অংশের তুলনায় চার গুণ দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে এই এলাকা। ইউরেনিয়ামসহ বিলিয়ন বিলিয়ন ব্যারেল তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল আধার রয়েছে গ্রিনল্যান্ডে। ভূখনিজ বাজারে বর্তমানে চীন বিশাল জায়গা দখল করে রেখেছে। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক দেশ সেই জায়গায় প্রতিযোগিতায় নামতে চায়।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আরভিনের বিজ্ঞানী এরিক রিগনোট বলেন, তেল, গ্যাস বা খনিজের চেয়ে গ্রিনল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ বরফ রয়েছে। যদি সেই বরফ গলে যায়, তাহলে তার প্রভাবে বিশ্বজুড়ে উপকূলরেখায় পরিবর্তন দেখা যাবে। নাটকীয়ভাবে আবহাওয়ার ধরনও পরিবর্তন হবে। গ্রিনল্যান্ডের সব বরফ গলে গেলে বিশ্বের সমুদ্রের উচ্চতা ৭ দশমিক ৪ মিটার বৃদ্ধি পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর বোল্ডারে ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের পরিচালক মার্ক সেরেজে জানিয়েছেন, আগামী একুশ শতাব্দীতে গ্রিনল্যান্ড হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে যাওয়ার প্রভাব সমুদ্রের উচ্চতা বাড়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে।

গ্রিনল্যান্ড সমুদ্রস্রোতের গতি বাড়াতে ইঞ্জিনের মতো কাজ করে। সমুদ্রের এই স্রোত গ্রিনল্যান্ড আটলান্টিক মেরিডিওনাল ওভারটার্নিং সার্কুলেশন বা এএমওসি নামে পরিচিত। গ্রিনল্যান্ডের বরফগলা পানি সমুদ্রে চলে আসার কারণে এই স্রোতের গতি বর্তমানে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এই স্রোতের ভারসাম্য নষ্ট হলে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার কিছু অংশ দীর্ঘস্থায়ী বরফে ঢেকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জলবায়ুবিজ্ঞানীরা। এর ফলে বিভিন্ন দেশের কৃষিকাজে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রে বিপর্যয় দেখা যাবে।

সূত্র: ইউরোনিউজ