কোয়ালা দিনে ঘুমায় ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা
কোয়ালা দিনে ঘুমায় ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা

কোন প্রাণী কতক্ষণ ঘুমায় জানেন কি

একবার ঘুমালে হয়তো ৯-১০ ঘণ্টার আগে আপনার ঘুমই ভাঙে না। তাই ঘুমকাতুরে হিসেবে আপনার বেশ সুনাম রয়েছে বন্ধুদের কাছে। তবে অনেক প্রাণী রয়েছে, যাদের ঘুমানোর সময় জানলে আপনি চমকে যেতে পারেন। ভালুকের মতো দেখতে কোয়ালা দিনে ঘুমায় ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা। মানে মাত্র ৪ থেকে ৯ ঘণ্টা জেগে থাকে। পাইথন সাপ দিনে ১৮ ঘণ্টা ঘুমায়। তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে মাত্র দুই ঘণ্টা ঘুমায় ঘোড়া। শুধু ঘুমের সময়ই নয়, ঘুমানোর ধরনেও বেশ বৈচিত্র্য রয়েছে প্রাণীদের মধ্যে। শুয়ে, বসে বা গাছে হেলান দিয়ে ঘুমাতে পারে বিভিন্ন প্রাণী। প্রাণীদের ঘুমের ধরন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক—

ডলফিন

ডলফিন প্রায় পুরো জীবন পানিতে কাটায়। যদিও স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে তাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন গ্রহণ করতে শ্বাস নিতে হয়। ঘুমানোর সময় ডলফিনের মস্তিষ্কের অর্ধেক অংশ বিশ্রাম নেয়, বাকি অর্ধেক অংশ সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সচল থাকে। ডলফিন ঘুমানোর সময় সাধারণত এক চোখ খোলা রেখে পানিতে কাঠের টুকরার মতো ভেসে থাকে। বেশ পরিশ্রমী হলেও টানা পাঁচ দিন না ঘুমিয়ে থাকতে পারে ডলফিন।

ডলফিন

তিমি

ডলফিনের মতো তিমিও ঘুমের সময় মস্তিষ্কের অর্ধেক অংশ নিষ্ক্রিয় করে ফেলে এবং এক চোখ খোলা রেখে ঘুমায়। স্পার্ম প্রজাতির তিমি ঘুমানোর সময় মাথা ওপরে রেখে খাড়াভাবে ঘুমায়। তবে হাম্পব্যাক প্রজাতির তিমি ঘুমায় পানিতে স্থির হয়ে। তিমির বিভিন্ন প্রজাতি মাত্র ৩০ মিনিট ঘুমায়। কারণ, বেশি ঘুমালে তিমির শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়। তাই বিভিন্ন প্রজাতির তিমি জন্মের প্রথম মাসে ঘুমায় না।

হাতি

হাতি প্রতিদিন মাত্র দুই ঘণ্টা ঘুমায়। বেশির ভাগ সময় দাঁড়িয়ে ঘুমায় হাতি। খুব কম ক্ষেত্রেই হাতি শুয়ে ঘুমায়।

হাতি

কোয়ালা

ছোট্ট প্রাণী কোয়ালা। দেখতে অনেকটা ভালুকের মতো। চিড়িয়াখানায় থাকা কোয়ালা দিনে ২২ ঘণ্টা নিয়মিত ঘুমায়। তবে বন্য কোয়ালা দিনে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ঘুমায় আর বাকি সময় বিশ্রাম নেয়। কোয়ালা সাধারণত ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা খায়। এই পাতা হজম হতে অনেক সময় ও শক্তি প্রয়োজন হওয়ায় কোয়ালা বেশি ঘুমায়।

সিন্ধুঘোটক

অনেকেই দাবি করেন, তাঁরা যেকোনো জায়গায় ঘুমাতে পারেন। প্রাণীদের মধ্যে এই দাবি একমাত্র ওয়ালরাস বা সিন্ধুঘোটক করতে পারে। সিন্ধুঘোটক মূলত আর্কটিক অঞ্চলের স্তন্যপায়ী প্রাণী। বরফাচ্ছাদিত জলাধারে বাস করলেও যেকোনো জায়গায় ঘুমানোর ক্ষমতা রয়েছে প্রাণীটির। সমুদ্রের গরু হিসেবে পরিচিত এই প্রাণী ভাসমান অবস্থায় ঘুমানোর পাশাপাশি সমুদ্রতটে শুয়ে বা বরফের ওপরও ঘুমাতে পারে।

ওয়ালরাস বা সিন্ধুঘোটক

ব্যাঙ

আমাদের গ্রহের সব ধরনের পরিবেশে ব্যাঙ দেখা যায়। শীতকালে ঘুমের কৌশল হিসেবে চিরনিদ্রা বা হাইবারনেশন কৌশল অনুসরণ করে ব্যাঙ। ব্যাঙের ঘুম বেশ রহস্যময় বিষয় বটে। ব্যাঙ আসলে ঘুমায়, নাকি নিস্তেজ হয়ে থাকে, তা নিয়ে নানা গবেষণা চলছে। নিকটাটিং মেমব্রেন নামে চোখের পাতা দিয়ে চোখ ঢেকে রাখে ব্যাঙ।

সূত্র: বিবিসি আর্থ