আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন

মহাকাশের গবেষণাগারে তৈরি হচ্ছে মানুষের কৃত্রিম মস্তিষ্ক

বিজ্ঞানীরা আলঝেইমার, পারকিনসন ও মেরুদণ্ডের আঘাতের জন্য নতুন চিকিৎসার উপায় বের করছেন। সেই গবেষণার অংশ হিসেবে মহাকাশে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের (আইএসএস) গবেষণাগারে ক্ষুদ্র মানব মস্তিষ্ক তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মস্তিষ্কের অর্গানয়েড বৃদ্ধি করার পরীক্ষায় সাফল্যও পেয়েছেন তাঁরা।

অর্গানয়েড এমন ধরনের কোষের সমষ্টি, যা কৃত্রিমভাবে মানব অঙ্গের গঠন ও কার্যকারিতা অনুকরণ করতে পারে। এর মাধ্যমে চিকিৎসার অযোগ্য স্নায়বিক রোগ নিরাময়ের জন্য নতুন পরীক্ষা নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। বায়োটেকনোলজি কোম্পানি অ্যাক্সোনিস থেরাপিউটিকস উদ্ভাবিত এই পরীক্ষায় কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কোষে উপকারী জিন থেরাপির মাধ্যমে নতুন ঘরানার ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের পরিবর্তিত ভাইরাসকে ভাইরাল ভেক্টর বলা হয়। এসব আলঝেইমার, পারকিনসন ও মেরুদণ্ডের আঘাতের চিকিৎসার জন্য বিশেষভাবে কার্যকর বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

পৃথিবীতে মস্তিষ্কের কোষ বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করার সময় মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু মহাকাশে প্রায় শূন্য মাধ্যাকর্ষণ শক্তি থাকায় সহজেই মানুষের মস্তিষ্কের অর্গানয়েড পরীক্ষা করে নতুন অর্গানয়েড তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা।

অ্যাক্সোনিস থেরাপিউটিকসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শেন হেগার্টি বলেন, মহাকাশে মাইক্রোগ্রাভিটির পরিবেশে গবেষণা করার সুবিধা অনেক। ২০২৩ সালের আগস্টে অ্যাক্সোনিস থেরাপিউটিকস তাদের ভাইরাল ভেক্টর, পরিপক্ব নিউরন ও  স্নায়ুকোষ ধারণকারী অ্যাস্ট্রোসাইট হিমায়িত করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রেরণ করে। সেখানে বায়োসেল নামে একটি মেশিনে সব রাখা হয়, যা কোষ গঠনের পরিবেশ তৈরি করে।

নাসার মহাকাশচারী মাইক ব্যারাট মস্তিষ্কের অর্গানয়েড নমুনা নিয়ে এ পরীক্ষা করেন। সেখানে ভাইরাল ভেক্টরের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য বায়োসেল নামে একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এরপর ত্রিমাত্রিক টিস্যুর মাধ্যমে জিন থেরাপি–সংক্রান্ত পরীক্ষা করা হয়। এর ফলে মহাকাশে দ্রুত সময়ের মধ্যে মানব মস্তিষ্কের ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করা গেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: ডেইলি মেইল