বর্তমানে পেসমেকারসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্র অগণিত মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করছে। এসব বৈদ্যুতিক যন্ত্র কিছুটা ভারী ও অনমনীয় হওয়ায় কখনো কখনো জটিলতা তৈরি করে। সেই সংকট মোকাবিলা করতে জীবন্ত কোষ ও কৃত্রিম টিস্যু ব্যবহার করে বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা।
শরীরে আলাদাভাবে যন্ত্র বসানো হলেও যন্ত্রগুলোর সঙ্গে কোষের সংযোগ থাকে না। আর তাই মানুষের কোষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকবে, এমন যন্ত্র নকশা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। দীর্ঘ গবেষণার পরে জীবন্ত বায়োইলেকট্রিক যন্ত্রের একটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ তৈরি করেছেন তারা। যন্ত্রটি অনেক ওয়ানটাইম ব্যান্ডএইডের মতো ত্বকে লাগানো যায়। বিজ্ঞানী জিয়াউন শি বলেন, ‘আমরা খুব উত্তেজিত। এ যন্ত্র তৈরিতে দেড় দশক সময় লেগে গেছে। মানুষের শরীরের সঙ্গে বৈদ্যুতিক যন্ত্র যুক্ত করা বেশ কঠিন। মানুষের কোষ জীবন্ত। আর তাই সেন্সরযুক্ত পাতলা নমনীয় ইলেকট্রনিক সার্কিটযুক্ত যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে। যন্ত্রটি ট্যাপিওকা স্টার্চ ও জেলটিন থেকে তৈরি জেল দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। ফলে যন্ত্রটি ত্বকে স্থাপন করা হলে ব্যাকটেরিয়া কার্যকর উপায়ে প্রদাহ কমায়। যন্ত্রে থাকা সেন্সর ত্বকের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতাও পর্যবেক্ষণ করতে পারে।’
এরই মধ্যে ইঁদুরের ওপর যন্ত্রটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। যন্ত্রটি নাম রাখা হয়েছে অ্যাকটিভ বায়োইনটিগ্রেটেড লিভিং ইলেকট্রনিকস বা অ্যাবেল। এই যন্ত্র দেড় বছর বা তার বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যন্ত্রটি যখন প্রয়োজন, তখন ব্যবহার করা যাবে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী সেহিউন কিম বলেন, এই যন্ত্র ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষত দ্রুত সারাতেও ব্যবহার করা যাবে। বিভিন্ন টিস্যু ও কোষের প্রদাহ ও রোগে এই যন্ত্র ব্যবহারের সুযোগ আছে। ভবিষ্যতে এই যন্ত্রের মাধ্যমে মস্তিষ্কের নিউরণের সঙ্গেও সংযোগ করা সম্ভব।
সূত্র: শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়