এখন যেন সবকিছুতেই তাড়াহুড়া। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব কাজ করতে চান সবাই। সেই আবহেই কি না, মাত্র তিন ঘণ্টায় নতুন ৪৯টি ছায়াপথ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আফ্রিকার মিরক্যাট রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ৪৯টি নতুন গ্যাস-সমৃদ্ধ ছায়াপথ আবিষ্কার করেছেন। এই টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট ধরনের আবিষ্কারের গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক নোটিশে।
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মার্সিন গ্লোয়াকি এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। প্রথম দিকে গবেষক দল যে গ্যালাক্সি নিয়ে গবেষণা করেন, সেখানে তেমন কোনো তারা গঠনের গ্যাসের খোঁজ পাওয়া যায়নি। মার্সিন গ্লোয়াকি পুনরায় তথ্যাদি বিশ্লেষণ করলে অন্য সব ছায়াপথ আবিষ্কার করেন। মোট ৪৯টি গ্যালাক্সির গ্যাস শনাক্ত করেন তিনি।
গ্লোয়াকি বলেন, ‘বিভিন্ন ছায়াপথে তারকা গঠনকারী গ্যাস খুঁজে পাওয়ার জন্য মিরক্যাটের মতো যন্ত্র দুর্দান্ত কাজ করে। মাত্র তিন ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে এতগুলো গ্যালাক্সির খোঁজ পেয়েছি আমরা। এত অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০টি নতুন গ্যালাক্সি খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি একেবারেই আশা করিনি আমরা। আরও সঠিকভাবে বললে মাত্র আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে আমরা এতগুলো ছায়াপথের খোঁজ পাই। টেলিস্কোপের তথ্যাদির মাধ্যমে ছায়াপথ খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করি আমরা।’
নতুন ছায়াপথগুলোর অনানুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে ফর্টিনাইনারস বা উনপঞ্চাশের দল। ৪৯টি নতুন ছায়াপথকে রাতের আকাশে সোনার খনির মতো মূল্যবান বলে মনে করছেন গবেষকেরা। দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েস্টার্ন কেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এড এলসন বলেন, ‘মিরক্যাট ভালো রকমের একটি ইমেজিং যন্ত্র। নতুন ছায়াপথ অধ্যয়নের জন্য আমরা বেশ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করেছি। আমাদের গবেষণা আরও বড় ছায়াপথ খুঁজে বের করতে কাজে আসবে। ছায়াপথ শনাক্ত করতে আমরা গ্যাসীয় উপাদানের বিষয়টি জানতে পারি। যেখানে তিনটি ছায়াপথ তাদের গ্যাস দ্বারা সরাসরি যুক্ত। এই তিন ছায়াপথ বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। আলোর অন্যান্য তরঙ্গদৈর্ঘ্যের গ্যালাক্সি অধ্যয়ন করে আমরা নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছি। সেখানে কেন্দ্রীয় ছায়াপথ থেকে অনেক নক্ষত্র তৈরি হয়েছে। ছায়াপথগুলো একে অন্যের গ্যাস ভাগাভাগি করে জ্বালানি সরবরাহ করেছে।’
মিরক্যাট টেলিস্কোপের পূর্ণ নাম কারু অ্যারে টেলিস্কোপ। দক্ষিণ আফ্রিকার নর্দার্ন কেপের মিরক্যাট ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত এই টেলিস্কোপ। এটি ৬৪টি অ্যানটেনা নিয়ে গঠিত একটি বিশালাকার রেডিও টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপটি ২০১৮ সালে চালু হয়।
সূত্র: ফিজিকস ডট অর্গ