প্রতিবছর প্রায় এক হাজার টন কার্বন যুক্ত হয় বায়ুমণ্ডলে। বায়ুমণ্ডলে থাকা ৩০০ কোটি টন কার্বনই শোষণ করে নেয় সমুদ্র। আর তাই সমুদ্র থেকে কার্বন অপসারণে ইকুয়েটিক প্রসেস নামের একটি অভিনব কার্বন অপসারণ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২৩ সালের সেরা আবিষ্কার হিসেবে এই প্রযুক্তিকে বিবেচনা করা হচ্ছে। আর তাই নতুন এ প্রযুক্তি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। এরই মধ্যে নতুন প্রযুক্তিনির্ভর প্ল্যান্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে সিঙ্গাপুর। আগামী বছরের মধ্যেই প্ল্যান্টটি চালু করা হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন বিশ্বের বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে নিরাপদ স্তরে রাখতে ২০৫০ সালের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ শ কোটি মেট্রিক টন কার্বন অপসারণ করতে হবে। আর তাই সমুদ্র থেকে কার্বন অপসারণের জন্য নতুন প্রযুক্তিনির্ভর একটি প্ল্যান্ট তৈরি করছে সিঙ্গাপুরের জাতীয় পানি সংস্থা পিআইবি। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস’ ও ‘ইকুয়েটিক’ প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় প্ল্যান্টটি তৈরি করা হচ্ছে। সমুদ্র থেকে প্রায় চার হাজার টন কার্বন ডাই–অক্সাইড অপসারণ করতে সক্ষম প্ল্যান্টটি তৈরি করতে খরচ হবে প্রায় দুই কোটি মার্কিন ডলার।
সমুদ্র থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড অপসারণের নতুন এই প্রযুক্তি নিয়ে অনেকে আশাবাদী হলেও এর মাধ্যমে নতুন পরিবেশগত ঝুঁকি তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানী পাং চি মেং বলেন, সমুদ্রের পানি প্রতি ইউনিট আয়তনে বাতাসের তুলনায় প্রায় ১৫০ গুণ বেশি কার্বন ডাই–অক্সাইড ধারণ করে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে সিঙ্গাপুর ও লস অ্যাঞ্জেলেসের বন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে কার্বন অপসারণের প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি প্ল্যান্ট প্রতিদিন প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম কার্বন ডাই–অক্সাইড অপসারণ করছে। প্রক্রিয়াজাত পানি পুনরায় সমুদ্রে ফেলার আগে সেগুলো বিশুদ্ধ করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ২০৪৫ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুর কার্বনশূন্য লক্ষ্য অর্জন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: টাইম ডটকম