আগ্নেয়গিরি
আগ্নেয়গিরি

আগ্নেয়গিরির ম্যাগমা চেম্বার খনন করবেন বিজ্ঞানীরা, কেন

খনিজপদার্থ উত্তোলনের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে নিয়মিত ভূপৃষ্ঠ খনন করে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এবার ইউরোপের একদল বিজ্ঞানী উত্তর-পূর্ব আইসল্যান্ডে অবস্থিত ক্রাফলা আগ্নেয়গিরির ‘ম্যাগমা’ চেম্বার খনন করে ম্যাগমা অবজারভেটরি তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। গত এক হাজার বছরে প্রায় ৩০ বার ক্রাফলা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নু৵ৎপাত হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝি অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে আগ্নেয়গিরিটিতে। আর তাই সুপ্ত আগ্নেয়গিরিটির ম্যাগমা চেম্বার বা গলিত অংশ যেখানে রয়েছে, সেখানে অবজারভেটরি তৈরি করতে চান বিজ্ঞানীরা।

এ বিষয়ে বিজ্ঞানী বজোর্ন গাউমুন্ডসন বলেন, ক্রাফলার ম্যাগমা টেস্টবেড বা আগ্নেয়শিলার ভূগর্ভস্থ আচরণ কেমন হয় তা জানার জন্য আগ্নেয়গিরির ম্যাগমা চেম্বার খনন করা হবে। এই অনুসন্ধান বিজ্ঞানীদের অগ্ন্যুৎপাতের ঝুঁকির পূর্বাভাস দিতে পারবে। এ ছাড়া ভূতাপীয় শক্তিকে নতুনভাবে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। আগ্নেয়গিরির শক্তিকে কার্যকর বিদ্যুৎশক্তি হিসেবে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তা–ও জানা যাবে।

জানা গেছে, ২০২৭ সালে মাটির প্রায় ২ দশমিক ১ কিলোমিটার গভীরে ভিন্ন রকমের আন্ডারগ্রাউন্ড ম্যাগমা অবজারভেটরি তৈরি করার জন্য কাজ শুরু হবে। বিভিন্ন মরুভূমিতে, যেমন টেলিস্কোপ মানমন্দির হিসেবে কাজ করে, তেমনি আগ্নেয়গিরির রহস্য জানতে মাটির নিচে এই মানমন্দির তৈরি করা হবে। জার্মানির মিউনিখের লুডভিগস-ম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটির আগ্নেয়গিরিবিষয়ক গবেষক ইয়ান লাভেল বলেন, আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ সাধারণত সিসমোমিটারের মতো সরঞ্জাম দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। পৃষ্ঠের লাভার বিপরীতে আমরা মাটির নিচের ম্যাগমা সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না। আমরা ম্যাগমাকে যন্ত্র হিসেবে তৈরি করতে চাই। ম্যাগমার মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর স্পন্দন শুনতে চাই। এ জন্য চাপ ও তাপমাত্রার সেন্সর গলিত শিলার মধ্যে স্থাপন করা হবে। এর ফলে আমরা ভবিষ্যতে ম্যাগমাতে কী ঘটছে তা আগে থেকে বলতে সক্ষম হব।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এ গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের জিওথার্মাল পাওয়ার স্টেশন নিয়ে গবেষণার সুযোগ বাড়বে। এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র ম্যাগমার চরম তাপমাত্রার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করে। ম্যাগমা অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা তাপের উৎস যা হাইড্রোথার্মাল সিস্টেমকে শক্তি দেয়। এতে ভূতাপীয় শক্তি তৈরি হয়। আইসল্যান্ডের প্রায় ২৫ ভাগ বিদ্যুৎ ও ৮৫ ভাগ গৃহ উত্তাপের জন্য ভূতাপীয় উত্স ব্যবহার করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি