বিজ্ঞানীরা অদ্ভুত ধরনের এক গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন। সৌরজগতের বাইরের এই গ্রহ বা এক্সোপ্ল্যানেটের নাম দেওয়া হয়েছে ওয়াসপ-৬৯ বি। এই গ্রহের লেজের অস্তিত্ব রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই লেজের দৈর্ঘ্য ৫ লাখ ৬৩ হাজার কিলোমিটার। অনেকটা ধূমকেতুর মতো লেজ রয়েছে গ্রহটির। গ্রহটির গ্যাসের লেজের খোঁজ পেয়ে বেশ বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, গ্রহটির বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, যে কারণে বাইরের স্তরে হালকা হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম কণা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে যাচ্ছে বা বেরিয়ে যাচ্ছে বলে লেজের মতো আকৃতি তৈরি হয়েছে। গ্যাস কণা গ্রহের চারপাশে সমানভাবে পালাতে পারছে না বলেই লেজ তৈরি হয়েছে। দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে গ্রহটির লেজ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটি পৃথিবী থেকে ১৬০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। গ্রহটি অতি গরম গ্যাসীয় দৈত্যাকৃতির। গ্রহটি তার হোস্ট নক্ষত্রের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ভাষ্যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রহটির গ্যাস কেন্দ্রীয় নক্ষত্র শোষণ করে নিচ্ছে। নাক্ষত্রিক বায়ুর কারণে গ্রহের গ্যাসকে লেজের আকারে দেখা যাচ্ছে। নাক্ষত্রিক বায়ুপ্রবাহের কারণে নক্ষত্রের বাইরের বায়ুমণ্ডল থেকে মহাকাশে বাইরের দিকে চার্জযুক্ত কণার একটি অবিচ্ছিন্ন প্রবাহ দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিদ ড্যাকোটাহ টাইলার বলেন, গ্রহের চারপাশে শুধু সমানভাবে বেরিয়ে আসা গ্যাসের পরিবর্তে শক্তিশালী নাক্ষত্রিক বায়ুপ্রবাহের কারণে বায়ুমণ্ডলের কণা গ্রহের পেছনে লেজ আকারে ভাসছে।
যদি নাক্ষত্রিক বায়ুপ্রবাহ না থাকত, তাহলে গ্রহের চারপাশের গ্যাস গোলাকার ও প্রতিসম পথে নির্গত হতো। নাক্ষত্রিক বায়ুপ্রবাহের কারণে লেজের আকার দেখা যাচ্ছে। গ্রহতে আবিষ্কৃত লেজটি গ্রহের ব্যাসার্ধের সাড়ে সাত গুণের বেশি প্রসারিত। লেজটি তার চেয়েও দীর্ঘ হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এক্সোপ্ল্যানেটের এমন লেজ বেশ রহস্যময়। এসব লেজের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রহের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
সূত্র: এনডিটিভি