শিশুদের অধিকাংশ খেলনা তৈরি হয় প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থেকে। এই রাসায়নিক পদার্থ সরাসরি প্রভাব ফেলছে শিশুদের স্বাস্থ্যে। আর তাই শিশুদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় খেলনায় রাসায়নিক পদার্থ নিষিদ্ধ করতে আইন প্রণয়নের চেষ্টা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এরই মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট শিশুদের খেলনা সুরক্ষা ও উন্নত করার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব সমর্থন করেছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য মেরিয়ন ওয়ালসম্যান বলেন, বর্তমান খেলনা সুরক্ষা নির্দেশিকা বেশ পুরোনো, যা ২০০৯ সালে পাস হয়। অনলাইন মার্কেটপ্লেসের ক্রমবর্ধমান বিকাশের কারণে এর সংশোধনের প্রয়োজন। এ ছাড়া ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারের মাত্রা বেড়েছে। সেই মাত্রা অনুসারে খেলনা তৈরিতে শিশুর সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন বলেন, ২০২৩ সাল থেকে ইউরোপীয় কমিশন নতুন আইন প্রণয়নের চেষ্টা করছে। নতুন প্রস্তাব পাস হলে শিশুদের ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্বারা তৈরি খেলনা থেকে সুরক্ষা করা যাবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির জন্য আইনি কাঠামো তৈরি করতে হবে। অনিরাপদ খেলনা সহজে শনাক্ত করতে হবে। শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নতুন নিয়ম প্রবর্তন করা হচ্ছে।
শিশুদের খেলনা তৈরিতে শ্বসন ও রক্ত সংবহনতন্ত্রে প্রভাব ফেলে এমন এন্ডোক্রাইন-ডিসরাপ্টিং কেমিক্যাল নামে ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে। ইথেন, পলিক্লোরাইট বাইফিনাইলস, অরগানোক্লোরিন কম্পাউন্ডস এর মধ্যে অন্তর্গত। শিশুদের শ্বসন ও রক্ত সংবহনতন্ত্র, মস্তিষ্ক পূর্ণাঙ্গভাবে বিকাশের আগেই এসব রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসে বলে অনেক ঝুঁকি তৈরি হয়। রাসায়নিক পদার্থের কারণে শিশুর শ্বাসযন্ত্রে শৈশবকালীন হাঁপানি বৃদ্ধি পায়। নিউরোটক্সিক পদার্থ শিশুদের বিকাশমান মস্তিষ্কের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকারক। এই ক্ষতি প্রাপ্তবয়স্কদের মস্তিষ্কের তুলনায় কোনো আঘাতের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
শরীরের সংবহনতন্ত্রের বিকাশ বিঘ্নকারী রাসায়নিক পদার্থ শরীরের স্বাভাবিক হরমোন ক্রিয়াকলাপে প্রভাব ফেলে। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে ও পরবর্তী জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। শিশুরা খেলনা মুখে দেয়, সারাক্ষণ হাতে রাখে, এতে রাসায়নিক পদার্থের সরাসরি ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা। নতুন আইনের মাধ্যমে শিশু খেলনা প্রস্তুতকারকদের আইন মানতে বাধ্য করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: ইউরোনিউজ