মহাকাশে ঘণ্টায় ১০ লাখ মাইল গতিতে ছুটে চলা এক রহস্যময় বস্তুর সন্ধান পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। পৃথিবীর চেয়ে ২৭ হাজার গুণ বড় এই গতিশীল বস্তু আমাদের ছায়াপথের মধ্য দিয়ে এত দ্রুত ছুটছে যে এটি শিগগিরই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি থেকে বের হয়ে যেতে পারে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, পৃথিবী থেকে ৪০০ আলোকবর্ষের বেশি দূরে অবস্থান করছে বস্তুটি। এক আলোকবর্ষ ছয় ট্রিলিয়ন মাইলের সমান হয়, সেই হিসাবে ৪০০ আলোকবর্ষ কত ট্রিলিয়ন মাইল সমান, তা মাথায় আসবে না সহজে। বিশেষজ্ঞরা এখনো এই মহাজাগতিক বস্তুটি কী, তা নির্ধারণ করতে পারেননি। অনুমান করা হচ্ছে, বস্তুটি একটি একটি বাদামি বামন নক্ষত্র। এই নক্ষত্র গ্রহের চেয়ে বড় হলেও ভর কম হতে পারে। যদি বস্তুটি আসলেই বাদামি বামন হয়, তাহলে বস্তুটিকে প্রথম বিশৃঙ্খল ও গতিশীল কক্ষপথ যুক্ত বস্তু হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।
নাসার ‘ব্যাকইয়ার্ড ওয়ার্ল্ডস: প্ল্যানেট ৯’ প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবী জ্যোতির্বিদেরা প্রথম মহাকাশীয় এই বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন। এ বিষয়ে ব্যাকইয়ার্ড ওয়ার্ল্ডস প্রকল্পের সদস্য মার্টিন কাবাটনিক বলেন, ‘আমি উত্তেজনার মাত্রা বর্ণনা করতে পারব না। আমি প্রথম দেখেছিলাম এটি কত দ্রুতগতিতে চলছে। আমার তখন ধারণা ছিল, এই বস্তুর তথ্য ইতিমধ্যেই শনাক্ত করা হয়েছে।’
জ্যোতির্বিজ্ঞানী কাইল ক্রেমারের মতে, বেশ কয়েকটি জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্বের মাধ্যমে এই বস্তুর গতি ব্যাখ্যা করা যায়। একটি তত্ত্বে সিডব্লিউআইএসই জে১২৪৯ বস্তুকে দুই তারকা বা বাইনারি স্টার সিস্টেমের অংশ হিসেবে বলা হচ্ছে। দুই তারকার মধ্যে শ্বেত বামন তারকা সুপারনোভা হয়ে বিস্ফোরণের পরে বাদামি বামন মুক্তভাবে ছুটতে থাকে। আরেকটি তত্ত্বে বলা হচ্ছে, বস্তুটি গ্লোবুলার ক্লাস্টার নামে পরিচিত একটি টাইট ক্লাস্টারের মধ্য থেকে উদ্ভূত হয়। কোনো একটি কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোলের টানের মাধ্যমে মুক্ত হয় বস্তুটি।
নাসার ব্যাকইয়ার্ড ওয়ার্ল্ডস প্রকল্পে বিশ্বের নানা প্রান্তের স্বেচ্ছাসেবীরা ওয়াইড-ফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে এক্সপ্লোরার টেলিস্কোপের মাধ্যমে মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে থাকেন। বাদামি বামন হিসেবে নথিভুক্ত করা সবচেয়ে ছোট বস্তু হিসেবে মনে করা হচ্ছে রহস্যময় বস্তুটিকে।
সূত্র: ডেইলি মেইল