আর্কটিক মহাসাগরকে বিশ্বের অন্যান্য মহাসাগরের তুলনায় বেশ রহস্যময় বলা যায়। কারণ, এই মহাসাগরের বেশির ভাগ অংশই বছরের অনেকটা সময় বরফের চাদরে আবৃত থাকে। তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চার গুণ দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে আর্কটিক মহাসাগর। এমন পরিবর্তিত আবহাওয়ার ধরন বিশ্বের বাকি মহাসাগরের অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। সিনপটিক আর্কটিক সমীক্ষার অংশ হিসেবে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। আর্কটিক মহাসাগরের স্রোত ভালোভাবে বোঝার জন্য এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। সমুদ্রের স্রোত পর্যবেক্ষণ করতে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের উপস্থিতি অনুসরণ করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানী অ্যানাবেল পাইন বলেন, ১৯৫০ দশকে বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় পারমাণবিক পরীক্ষার সময় তেজস্ক্রিয়তা মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়ে। আটলান্টিক মহাসাগরে আয়োডিন-১২৯ ও ইউরেনিয়াম-২৩৬ মৌলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। খুব কম মাত্রায় উপস্থিতি থাকলেও এসব কণা এখনো শনাক্ত করা যায়। আটলান্টিক মহাসাগর থেকে আর্কটিক মহাসাগরের স্রোত গত কয়েক দশক ধরে কেমন আছে, তা জানতে এসব কণা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বহন করছে।
আর্কটিক অঞ্চলে উষ্ণায়নের প্রবণতা বেশি। বৈশ্বিক সমুদ্রের গড় তাপমাত্রার চেয়ে চার গুণ বেশি তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা দেখা যাচ্ছে সেখানে। যে কারণে আর্কটিক দ্রুতগতিতে বরফের আস্তরণ হারাচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, আর্কটিকের আশপাশের বিভিন্ন এলাকা, যেমন কানাডা বেসিনে গরম পানির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বরফ গলে স্বাদুপানি গত ২০ বছরে ৪০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সমুদ্রের উচ্চতা বাড়ছে। আর্কটিকের আশপাশের বিভিন্ন সাগরে উষ্ণ পানির কারণে বাস্তুসংস্থানে পরিবর্তন আসছে। গত ৪৫ বছরে আর্কটিকের উষ্ণতা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ইউরোপের বায়ুদূষণ আর্কটিক অঞ্চলের উষ্ণায়নের জন্য বড় প্রভাব ফেলছে।
সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ