পৃথিবীর কেন্দ্রে ঘূর্ণনব্যবস্থার পরিবর্তনের ফলে দিনের সময় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর ঘন অভ্যন্তরীণ কেন্দ্র পৃষ্ঠের তুলনায় কিছুটা পেছনের দিকে সরে যাচ্ছে বলেও গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। দিনের সময় বাড়ার এই হার সেকেন্ডের ভগ্নাংশতম হওয়ায় সাধারণভাবে বোঝা যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর ঘন ধাতব কেন্দ্র বা কোর গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে কিছুটা ভেতরে সরে যাচ্ছে। বিভিন্ন ভূমিকম্পের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোর ২০১০ সালের পর থেকে কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। শুধু তা–ই নয়, কিছুটা পেছনের দিকেও চলে যাওয়ায় মহাকাশে পৃথিবীর ঘূর্ণনে প্রভাব তৈরি হচ্ছে।
পৃথিবী চারটি প্রধান স্তর নিয়ে গঠিত। বাইরের অংশ, ম্যান্টেল, বাইরের কোর ও ভেতরের কোর। গ্রহের একেবারে কেন্দ্রে অর্থাৎ মাটির ৩ হাজার মাইল নিচে অভ্যন্তরীণ কোরের অবস্থান। কঠিন লোহা ও নিকেলবেষ্টিত বলাকৃতির এই অংশ খুবই গরম। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, অভ্যন্তরীণ কোরটি পৃথিবীপৃষ্ঠের চেয়ে দ্রুত ঘোরে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী জন ভিডাল বলেন, কোরটি এখন ধীর হয়ে গেছে ও পেছনের দিকে সংকুচিত হতে শুরু করেছে। অভ্যন্তরীণ কোর সম্পর্কে সরাসরি তথ্য জানার সুযোগ নেই। আর তাই ভূমিকম্পের ঘটনা থেকে সংগৃহীত তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। আর তাই ১২১টি প্রাকৃতিক ঘটনার পাশাপাশি ১৯৭১ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে সোভিয়েত টুইন পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্যাদিও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে পৃথিবীর পৃষ্ঠে কম্পন তৈরি হয়। এতে প্রতিটি স্তরের অবস্থা ও অবস্থানের সূক্ষ্ম পরিবর্তন হয়ে থাকে। এসব পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর ভেতরের গোলকের গতিতে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা খুব কঠিন। গোলকের গতি ১ সেকেন্ডের ১ হাজার ভাগের কম সময় কমে এসেছে। যে কারণে পৃথিবীর দিনের সময়ে সেকেন্ডের ভগ্নাংশতম বেড়েছে।
সূত্র: ডেইলি মেইল