অ্যান্টার্কটিকার একটি হিমবাহ
অ্যান্টার্কটিকার একটি হিমবাহ

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিমবাহ একই জায়গায় লাটিমের মতো ঘুরছে কেন

রহস্যময় মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা। বরফে ঘেরা এই মহাদেশের ঠিক উত্তরে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিমবাহ। ‘এ২৩এ’ নামের এই হিমবাহটি দীর্ঘদিন ধরে একই জায়গায় লাটিমের মতো ঘুরছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। হিমায়িত হিমবাহটি সমুদ্রের বিশাল ঘূর্ণমান স্রোতের মধ্যে আটকে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

অ্যান্টার্কটিকার উত্তরে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সমুদ্র স্রোত দেখা যায়। সেই স্রোতের কারণেই একই জায়গায় ঘুরছে হিমবাহটি। প্রাকৃতিক এই ঘটনাকে সমুদ্রবিজ্ঞানীরা টেলর কলাম হিসেবে অভিহিত করেন।

মেরু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মার্ক ব্র্যান্ডন জানিয়েছেন, সাধারণত হিমবাহকে ক্ষণস্থায়ী জিনিস বলে মনে করা হয়। কারণ, হিমবাহকে টুকরা টুকরা হয়ে গলে যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। হিমবাহটি ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকা উপকূল রেখা থেকে মুক্ত হলেও সমুদ্রে আসার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েডেল সাগরের তলদেশে আটকে যায়। তিন দশক ধরে একটি স্থির বরফ দ্বীপ হিসেবে স্থির ছিল হিমবাহটি। এরপর ২০২০ সালের পর আবার ভাসতে শুরু করে। পরে উষ্ণ বায়ু ও পানির কারণে উত্তর দিকে চলতে শুরু করে। এই বছরের এপ্রিলের শুরুতে  হিমবাহটি অ্যান্টার্কটিকা সার্কামপোলার কারেন্ট বা স্রোতে প্রবেশ করে। এই স্রোত ভীষণ শক্তিশালী। পৃথিবীর সব নদী একত্রিত হয়ে যে গতির স্রোত তৈরি করে তার চেয়ে এক শ গুণ বেশি শক্তিশালী এই স্রোত। সেই হিসেবে ট্রিলিয়ন-টন ওজনের  হিমবাহটি এত দিনে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে চলে যাওয়ার কথা। সেটি না হয়ে হিমবাহটি দক্ষিণ অর্কনি দ্বীপপুঞ্জের ঠিক উত্তরে অবস্থান করছে। দিনে প্রায় ১৫ ডিগ্রি ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরছে হিমবাহটি।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, হিমবাহটির আকার প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটার। ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিকা সার্ভের বিজ্ঞানী মাইক মেরেডিথ বলেন, সমুদ্র আসলে বিস্ময়কর একটি জায়গা। এই গতিশীল হিমবাহটি সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটি। এমন দৃশ্য বা টেলর কলাম বাতাসের কারণেও তৈরি হতে পারে।

সূত্র: বিবিসি