যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীদের তৈরি হালনাগাদ ওয়ার্ল্ড ম্যাগনেটিক মডেলে বলা হয়েছে, চুম্বকীয় উত্তর মেরু আগামী ১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার কাছাকাছি সরে যাবে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ২০১৯ সাল থেকে চৌম্বক মেরু বছরে ২২ মাইল দ্রুতগতিতে সরে যাচ্ছে। ফলে আগের চেয়ে প্রায় ১১০ মাইল দূরে সরে গেছে চুম্বকীয় উত্তর মেরু। পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের পরিবর্তন সাম্প্রতিক সময়ে বেশি হলেও অনিয়মিতভাবে দেখা যাচ্ছে। ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের বিজ্ঞানী উইলিয়াম ব্রাউন বলেন, ‘চুম্বকীয় উত্তর মেরু বর্তমানে যেমন আচরণ করছে, তেমন আচরণ আমরা আগে কখনো দেখিনি। চুম্বকীয় উত্তর মেরু আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ দিকে, সাইবেরিয়ার দিকে সরে গেছে।’
সত্যিকারের উত্তর মেরু হচ্ছে পৃথিবীর সেই বিন্দু, যেখানে দ্রাঘিমাংশের সব রেখা পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষে একত্র হয় এবং ৯০ ডিগ্রি উত্তরে এর অবস্থান স্থির থাকে। অন্যদিকে চুম্বকীয় উত্তর মেরু ভৌগোলিক মেরু, উত্তর গোলার্ধের এই বিন্দুতে পৃথিবীর সব চৌম্বকক্ষেত্র রেখা সরাসরি পৃথিবীর কেন্দ্রে নির্দেশ করে। চৌম্বকক্ষেত্রের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চুম্বকীয় উত্তর মেরু বছর বছর সরে যাচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড ম্যাগনেটিক মডেল অনুসারে চুম্বকীয় উত্তর মেরু ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারিতে ৮৫.৭৬ ডিগ্রি উত্তরে ও পূর্বে ১৩৯.২৭ ডিগ্রিতে অবস্থান করবে। বিজ্ঞানী ব্রাউন বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করছি, ২০৩০ সালের মধ্যে চুম্বকীয় উত্তর মেরু ৮৪.৭২ ডিগ্রি উত্তরে ও পূর্বে ১২৬.০৭ ডিগ্রিতে থাকবে।’
চুম্বকীয় উত্তর মেরু নানা কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিভিন্ন নেভিগেশন যন্ত্র থেকে শুরু করে জিপিএসের মতো যন্ত্র মেরুকেন্দ্রিক। যদিও চুম্বকীয় উত্তর মেরু ভৌগোলিক উত্তর মেরু থেকে আলাদা, তাই বিষয়টির প্রভাব খুব সহজে বোঝা যায় না।
প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভে, ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা মিলে প্রতি পাঁচ বছর পরপর ওয়ার্ল্ড ম্যাগনেটিক মডেল প্রকাশ করে থাকে।
সূত্র: ডেইলি মেইল