দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কারখানায় গরুর গোবর থেকে বায়োচার তৈরি করা হচ্ছে
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কারখানায় গরুর গোবর থেকে বায়োচার তৈরি করা হচ্ছে

গোবর থেকে তৈরি হচ্ছে ‘কালো সোনা’

গরুর গোবর রোদে শুকিয়ে জ্বালানি তৈরির পাশাপাশি সার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এবার গরুর গোবরসহ গবাদিপশুর বর্জ্যকে এক দিনের মধ্যে বায়োচারে রূপান্তর করার নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। বায়োচার হলো বিশেষ ধরনের কয়লা, যার মধ্যে ৩৫ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্বন থাকে। আর্থিক মূল্য ও পরিবেশের গুরুত্ব বুঝে বায়োচারকে ‘ব্ল্যাক গোল্ড’ বা কালো সোনা বলা হয়। কোরিয়া ইনস্টিটিউট অব এনার্জি রিসার্চের ক্লিন এয়ার রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষকেরা এরই মধ্যে গবাদিপশুর বর্জ্য থেকে বায়োচার তৈরির কাজ শুরু করেছেন।

বায়োচার তৈরির সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী ইউ জি-হো বলেন, ‘নতুন পদ্ধতিতে প্রতিদিন ১০ টন গবাদিপশুর সারকে বায়োচারে রূপান্তর করা সম্ভব। ২০২২ সালে পশুর বর্জ্য থেকে সারা বিশ্বে উৎপাদিত সারের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ কোটি টন, যার মধ্যে ৮৭ শতাংশই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা। এতে ৬০ দিনের বেশি সময় লেগে যায়। এই প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাই–অক্সাইডের চেয়ে ৩০০ গুণ বেশি শক্তিশালী নাইট্রাস অক্সাইডসহ অ্যামোনিয়া গ্যাসও নির্গত হয়। এ সমস্যা সমাধানে বিকল্প পদ্ধতিতে বায়োচার তৈরির কাজ করছি আমরা। গোবরকে বায়োচারে রূপান্তর করার মাধ্যমে নাইট্রাস অক্সাইড ও অ্যামোনিয়ার নির্গমনকে সম্পূর্ণরূপে রোধ করা যায়। একই সঙ্গে নতুন উপায়ে বাতাস থেকে কার্বন শোষণ করে বায়োচারে মেশানো হয়।’

গবাদিপশুর বর্জ্যকে দ্রুত বায়োচারে রূপান্তরের জন্য একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন যন্ত্রে বায়োচার দ্রুত শুকানো যায়। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ইউ জি-হো বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার চেওংইয়াং কাউন্টির চুংনামের একটি কারখানায় যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চীন, অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় চাহিদা মেটানোর জন্য বায়োচার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।’

সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ