এখনকার শিশুদের কাছে ডাইনোসর বেশ প্রিয়। সিনেমার কারণেও অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরও ডাইনোসর নিয়ে জানার আগ্রহ আছে। প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী ডাইনোসরের নানা আকার ও কঠিন নাম দেখা যায়। বলা হয়, এখন সবচেয়ে পরিচিত ডাইনোসরের নাম টি রেক্স।
টি রেক্সের পুরো নাম টাইর্যানোসরাস রেক্স। ধারণা করা হয়, টি রেক্স বড় মাংসাশী ডাইনোসরদের মধ্যে অন্যতম। এক শতাব্দীর বেশি আগে টি রেক্সের জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। ‘জুরাসিক পার্ক’ ও বিভিন্ন সিনেমায় টি রেক্স চরিত্রের কারণে টি রেক্স বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ডাইনোসর এখন। ১৯৯৩ সালের জুরাসিক পার্ক সিনেমায় ইনজেন ল্যাবের বিজ্ঞানীরা সাতটি টি রেক্স ক্লোন করেন। সেই ক্লোন করা টি রেক্সদের রাখা হয় ইসলা নুবলার নামের দ্বীপের জুরাসিক পার্কে। সেখান থেকেই শুরু হয় বিখ্যাত জুরাসিক পার্ক সিনেমার গল্প।
টাইর্যানোসরাস গ্রিক শব্দ, এর অর্থ অত্যাচারী টিকটিকি, আর রেক্স লাতিন শব্দ, যার অর্থ রাজা। অত্যাচারী টিকটিকিদের রাজা হিসেবে নাম রাখা হয়েছে টি রেক্স। টি রেক্সরা পৃথিবী শাসন করত ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষের দিকে। টি রেক্সের যত জীবাশ্ম মিলেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো ও পূর্ণাঙ্গ জীবাশ্মের নাম রাখা হয়েছে সু। সেটি যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর ফিল্ড মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। একেকটি প্রাপ্তবয়স্ক টি রেক্সের উচ্চতা ছিল গড়ে ৪১ ফুট বা ১২ মিটার। যদিও সম্পূর্ণ টি রেক্স এখনো পাওয়া যায়নি। প্রাপ্তবয়স্ক টি রেক্সের গড় ওজন ছিল ৬ হাজার ৯২৫ থেকে ১০ হাজার ৪৫০ কেজি।
টি রেক্স বড় আকারের মাংসাশী ডাইনোসর ছিল, যদিও সবচেয়ে বড় মাংসাশী ডাইনোসরের নাম স্পিনোসরাস। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির জীবাশ্ম শিকারি বার্নাম ব্রাউন ১৯০২ সালে মন্টানার হেল ক্রিকের প্রথম টি রেক্সের ফসিল আবিষ্কার করেন। যদিও প্রথম টি রেক্সের নমুনা ১৮৯২ সালে জীবাশ্মবিদ এডওয়ার্ড কোপ দক্ষিণ ডাকোটায় পান। ফেয়ারফিল্ড ওসবার্ন টি রেক্স নামকরণ করেন। টি রেক্স অন্যান্য ছোট আকারের ডাইনোসর শিকার করত।
টি রেক্স ছয় থেকে সাত কোটি বছর আগে তখনকার দ্বীপ মহাদেশ লারামিডিয়ায় বাস করত, যা এখন পশ্চিম উত্তর আমেরিকার অংশ। জীবাশ্ম রেকর্ড অনুসারে টি রেক্স পশ্চিম-উত্তর আমেরিকায় বাস করত। আধুনিক দিনের কানাডার সাসকাচোয়ান ও আলবার্টা থেকে টেক্সাস পর্যন্ত টি রেক্সের বাস ছিল। অন্যান্য ডাইনোসরের চেয়ে টি রেক্স বেশ আক্রমণাত্মক ও দ্রুত প্রকৃতির ছিল। টি রেক্সের হাঁটার গতি ছিল ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার। তবে দৌড়ের সময় সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স