সৌরজগতে সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ। উত্তপ্ত গ্রহটির এমন অনেক গুণ রয়েছে, যা সৌরজগতের অন্য গ্রহে দেখা যায় না। এবার যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মেসেঞ্জার মহাকাশযানের বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বুধ গ্রহের ভূপৃষ্ঠের নিচে ১০ মাইল পুরু হীরার আবরণ থাকতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বুধ গ্রহের অনেক ধাঁধার সমাধান এখনো করতে পারেননি। এমনকি বুধ গ্রহে গ্রাফাইট থাকা নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে বিজ্ঞানীদের মনে। তাঁদের ধারণা, বুধ গ্রহে একসময় কার্বনসমৃদ্ধ মহাসাগর ছিল। সেই মহাসাগরের কারণে গ্রাফাইট প্যাচ তৈরি হয়েছে গ্রহটিতে। একই কারণে বুধ গ্রহের পৃষ্ঠের নিচে তৈরি হয়েছে কার্বনসমৃদ্ধ ম্যান্টেল বা আস্তরণ। মহাকাশযান মেসেঞ্জারের তথ্য মতে, এই আস্তরণ গ্রাফিনের নয়, কার্বনের অন্য কোনো রূপ দিয়ে তৈরি। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এটি হীরার আস্তরণ।
বুধ গ্রহে হীরা থাকার বিষয়ে বিজ্ঞানী অলিভিয়ের নামুর বলেন, ‘আমরা আস্তরণ ও বুধ গ্রহের কেন্দ্রের চাপের তথ্য পরীক্ষা করছি। বুধ একটি কার্বনসমৃদ্ধ গ্রহ। কার্বন বহনকারী খনিজ আস্তরণ ও কোরের মধ্যে অবস্থান করছে। এটি অবশ্যই হীরা, গ্রাফাইট নয়। আমাদের গবেষণায় নাসা মেসেঞ্জার মহাকাশযানের ভূপদার্থগত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে।’
বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, শুরুতে বুধ গ্রহের মূল অংশটি সম্পূর্ণ তরল ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে স্ফটিক হয়ে উঠছে। স্ফটিক হয়ে ওঠার আগে বুধ গ্রহের তরল কেন্দ্রে কিছু কার্বন ছিল। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে কার্বনসমৃদ্ধ হয় গ্রহটি। আর কেন্দ্রের তরল পরিবর্তিত হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পুরু হীরার স্তর তৈরি হয়, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, বুধ গ্রহ তৈরি হয়েছিল কার্বনসমৃদ্ধ ধুলার মেঘ থেকে। যে কারণে বুধ গ্রহে অন্য গ্রহের তুলনায় কম অক্সিজেন ও বেশি কার্বন রয়েছে।
বর্তমানে মেসেঞ্জারের সংগ্রহ করা তথ্য কাজে লাগিয়ে বুধ গ্রহের অভ্যন্তরের বিদ্যমান চাপ ও তাপমাত্রা নিয়ে পরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, বুধ গ্রহের আবরণও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে বুধ গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন ও বিবর্তন সম্পর্কে আরও তথ্য জানানো যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: স্পেস ডট কম