পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়ায় হিগস বোসন কণা ঈশ্বর কণা হিসেবে আলোচিত। ২০১২ সালে আবিষ্কারের পর থেকে এই কণা পদার্থবিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। এমন প্রাথমিক কণা কীভাবে ভর অর্জন করে, তা বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করছেন। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা হিগস বোসন সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছেন। হিগস বোসন নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা মৌলিক কণার ধারণাকে পুনর্বিবেচনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে জানিয়েছেন তাঁরা।
কণা পদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড মডেলে হিগস বোসন হলো অন্যান্য কণাকে ভর দেওয়ার জন্য দায়ী কণা। এই কাজ কীভাবে হয়, তা জানার কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। রহস্যের উত্তর হিগস ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে। এই ক্ষেত্র একধরনের অদৃশ্য মাধ্যম, যা মহাবিশ্বকে বিস্তৃত করে। নতুন গবেষণায় হিগস বোসন কীভাবে ডব্লিউ ও জেড বোসনের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে, তার পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করা হয়েছে। ডব্লিউ ও জেড বোসন পদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড মডেলে মূল ভূমিকা পালনকারী দুটি অন্যান্য মৌলিক কণা। নতুন গবেষণার ফলাফলকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে। কারণ, তাঁরা এক দশক আগের তাত্ত্বিক ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য নতুন প্রমাণ সরবরাহ করছেন। গবেষকেরা, হিগস বোসন ও একটি ডব্লিউ বোসনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। এই মিথস্ক্রিয়ায় হিগস বোসন ক্ষয়প্রাপ্ত কণায় পরিণত হয়, যাকে বটম কোয়ার্ক বলা হয়। এই মিথস্ক্রিয়া বাস্তব বলে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই ফলাফল মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা এক মিলিয়নের মধ্যে এক ভাগের কম বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া হিগস বোসন ও একটি জেড বোসনের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়। যেখানে বটম কোয়ার্ক ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ডব্লিউ বোসন মিথস্ক্রিয়া থেকে কিছুটা কম মাত্রা আছে এই মিথস্ক্রিয়ায়। এই ফলাফল স্ট্যান্ডার্ড মডেলের দৃঢ়তাকে বেশি সমর্থন করছে।
বিজ্ঞানীরা হিগস বোসন কীভাবে ক্ষয় হয়ে আকর্ষণীয় কোয়ার্কে পরিণত হয়, তা জানার চেষ্টা করেন। নতুন গবেষণার ফলাফল শুধু তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে আকর্ষণীয় নয়, কণা পদার্থবিজ্ঞানে গভীর প্রভাব ফেলবে। এই পরীক্ষা স্ট্যান্ডার্ড মডেলের বিভিন্ন ভবিষ্যদ্বাণীর যথার্থতা নিশ্চিত করছে। এমন পরীক্ষার মাধ্যমে মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের জানাশোনার সুযোগ বাড়বে। নতুন গবেষণার ফলাফল এলএইচসিতে আরও গবেষণার ভিত্তি তৈরি করছে।
সূত্র: গ্লাস অ্যালম্যানাক