পৃথিবীর চারপাশে অদৃশ্য এক তড়িৎ ক্ষেত্রের খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা—নাসার বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর চারপাশে থাকা অ্যাম্বিপোলার নামের তড়িৎ ক্ষেত্রটি আমাদের বায়ুমণ্ডলের একটি স্তরকে মহাকাশে ধরে রাখার কাজ করছে। আর তাই এই তড়িৎ ক্ষেত্রটিকে মাধ্যাকর্ষণের মতোই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তাঁরা।
এবারই প্রথম পৃথিবীর চারপাশে সূক্ষ্ম ও প্রায় শনাক্ত করা যায় না, এমন তড়িৎ ক্ষেত্রের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এই শক্তি ক্ষেত্রকে অ্যাম্বিপোলার তড়িৎ ক্ষেত্র বলা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রের কারণে রহস্যময় বাতাসে সুপারসনিক বিভিন্ন কণা ক্রমাগত পৃথিবীর মেরু থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, নতুন ক্ষেত্রের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে পারলে পৃথিবীতে কীভাবে প্রাণের বিকাশ ঘটেছে, তা জানা যেতে পারে।
গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকে বিভিন্ন মহাকাশযান পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে। তখন বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থা পৃথিবীর মেরুকেন্দ্রিক অদ্ভুত এক ঘটনা লক্ষ করে। মহাকাশযান চলার পথে বায়ুমণ্ডল থেকে নির্গত বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত সুপারসনিক কণার সঙ্গে আকস্মিক সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়। কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা মেরু থেকে বায়ুমণ্ডলে যাওয়া কণার স্রোত সম্পর্কে জানলেও নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এর জন্য দায়ী অ্যাম্বিপোলার তড়িৎ ক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বিভিন্ন কণা বৈদ্যুতিক চার্জের কারণে বায়ুমণ্ডল থেকে ১৫০ মাইল ওপরে পৃষ্ঠে ছুটে যাচ্ছে। সেই উচ্চতায় আমাদের বায়ুমণ্ডলের পরমাণু বিচ্ছিন্ন হয়ে ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রন ও ধনাত্মক চার্জযুক্ত আয়নে পরিণত হতে শুরু করে। যেহেতু এসব আয়ন ইলেকট্রনের চেয়ে ১ হাজার ৮৩৬ গুণ ভারী, তাই তারা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর দিকে চলে আসে। আবার যেহেতু তাদের বিপরীত চার্জ রয়েছে, তাই ইলেকট্রন ও আয়ন একটি তড়িৎ ক্ষেত্রের দ্বারা একত্র হয়, যা তাদের উভয়কে টেনে আনছে। এই শক্তিকেই নাম দেওয়া হয়েছে অ্যাম্বিপোলার। তবে পৃথিবীর বিকাশের সঙ্গে অ্যাম্বিপোলার তড়িৎ ক্ষেত্রটির প্রভাব সম্পর্কে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য জানা যায়নি।
সূত্র: ডেইলি মেইল