প্রত্যন্ত আর্কটিক অঞ্চলের এক মেরু ভালুকের ছবি দেখে চমকে গেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২৪ সালের ওশান ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার পুরস্কারের জন্য বাছাই করা ছবিগুলোর একটিতে দেখা যায়, মেরু ভালুকের মুখে প্লাস্টিক ঝুলছে। সেই মেরু ভালুকের ছবিটি তোলা হয় আর্কটিকের স্যালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের দূরবর্তী কিপার্ট দ্বীপ থেকে। নরওয়ের কাছে অবস্থিত কিপের্ট দ্বীপটি। সেলিয়া কুজালার নামের এক প্রকৃতিপ্রেমী আলোকচিত্রী প্লাস্টিক মুখে ধরা ভালুকের ছবিটি তুলেছেন।
মেরু ভালুকের বৈজ্ঞানিক নাম উরসাস মেরিটিমাস। মেরু ভালুকের ছবিটি মূলত আর্কটিকের জনবসতিহীন এলাকায় প্লাস্টিকের দূষণ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর ওপর কতটা প্রভাব ফেলছে তা তুলে ধরেছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের হিসাবে ঝুঁকিপূর্ণ প্রজাতির লাল তালিকায় মেরু ভালুকের নাম রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে মেরু ভালুকের সংখ্যা প্রায় ৩০ ভাগ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আর্কটিক কাউন্সিলের তথ্যমতে, আর্কটিকের প্রত্যন্ত এলাকা যেখানে মানুষ নেই, সেখানেও প্লাস্টিকের ব্যাগসহ পরিত্যক্ত মাছ ধরার জাল দেখা যায়। এসব পরিত্যক্ত জালে মেরু ভালুক, মাছ, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী ও রেইনডিয়ারের মতো স্থলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী আটকা পড়ে। পরিত্যক্ত বর্জ্য প্লাস্টিকের ভেলা হিসেবেও কাজ করে, যা আক্রমণাত্মক প্রজাতির ভ্রমণে সহায়তা করে থাকে।
বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে মেরু ভালুকেরা। সমুদ্রের বরফ গলে যাচ্ছে বলে শিকার করতে না পারার পাশাপাশি আর্কটিক এলাকায় প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণেও বেশ ঝুঁকিতে রয়েছে তারা। ফলে অনেক মেরু ভালুক খাবারের সন্ধানে স্থলভাগের দিকে চলে আসছে।
আলাস্কা ও কানাডার দক্ষিণ বিউফোর্ট সাগরের বেশ কয়েকটি মেরু ভালুকের পাকস্থলী বিশ্লেষণ করে প্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পোলার বিয়ার্স ইন্টারন্যাশনালের প্রধান বিজ্ঞানী জন হোয়াইটম্যান বলেন, মেরু ভালুক যখন মানুষের আবর্জনা খুঁজে পায়, তখন তাদের প্লাস্টিক খাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। সমুদ্রের বরফের আকার কমে যাওয়ার ফলে মেরু ভালুকের জীবনধারা ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স