ফ্লপি ডিস্ক চেনেন? এই প্রজন্মের পাঠকদের বেশিরভাগের উত্তরও হবে নেতিবাচক। তবে একটু বয়স্ক পাঠকদের অনেকর মনেই রয়ে গেছে ফ্লপি ডিস্কের স্মৃতি। অবাক করা তথ্য হলো—প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে থাকা জাপানে এখনো ফ্লপি ডিস্কের ব্যবহার আছে।
তবে পুরোনো ধারার প্রযুক্তির বিরুদ্ধে এবার রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করেছে জাপান। সম্প্রতি দেশটির একটি সরকারি কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এখনো পুরোনো ধারার প্রযুক্তি যেমন ফ্লপি ডিস্ক ও সিডি ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবেদন করা হচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের দুই হাজার ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। তাই ফ্লপি ডিস্কের মতো পুরোনো প্রযুক্তি ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে জাপান সরকার।
জাপানের ডিজিটালমন্ত্রী তারো কানো নতুন অনেক প্রযুক্তি সামনে আসা সত্ত্বেও পুরোনো প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে তীব্র অসন্তোষ জানান। দেশটির ডিজিটাল এজেন্সি তাই নতুন নীতি তৈরি করছে, যাতে সরকারি বিভিন্ন আবেদনের ক্ষেত্রে আধুনিক অনলাইন সেবাগুলো ব্যবহার করা হয়।
১৯৭১ সালে আবিষ্কার হওয়া ফ্লপি ডিস্ক ১৯৮০–এর দশকে জনপ্রিয়তা পায়। কারণ, ওই সময়ে কম্পিউটারের তথ্য সংরক্ষণ ও তথ্য লেনদেন ও প্রোগ্রাম চালোনার জন্য এটিই ছিল মূল উপায়। ২০০০ সালে সিডি, ডিভিডি ও ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ আবিষ্কারের ফলে ফ্লপি ডিস্কের জনপ্রিয়তা কমে যায়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরোনো ধারার এই প্রযুক্তি ধরে রাখার পেছনে ডিজিটাল সাক্ষরতা কম হওয়া, রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতি বেশি দায়ী। কমপ্যাক্ট ডিস্ক বা সিডির মতো প্রযুক্তি বাজারে এলেও পুরোনো প্রযুক্তি অনেকেই ছাড়েননি।
কানো বলেন, ‘আমি পুরোনো ফ্যাক্স মেশিনের ব্যবহার থেকে নিষ্কৃতি চাই। আমি এগুলো বাতিল করার পরিকল্পনা করেছি। আজকাল কেউ আর ফ্লপি ডিস্ক কেনে!’
গত বছর ফ্লপি ডিস্ক থেরি বন্ধের ঘোষণা দেয় সনি। এর পর থেকে জাপান সরকার ফ্লপি ডিস্কের ব্যবহার বন্ধের উদ্যোগ নেয়। টোকিওর সিটি গভর্নমেন্ট গত বছর অনলাইন স্টোরেজ ফরম্যাট বেছে নেওয়া শুরু করেছে।
কেবল জাপানই নয়, জার্মানিও পুরোনো প্রযুক্তি ব্যবহার বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানির ফেডারেল সরকার গত বছর পর্যন্ত ৯০০টির বেশি ফ্যাক্স মেশিন ব্যবহার করছিল। এটি জানার পর জার্মান সরকার ফ্যাক্স মেশিন বন্ধের উদ্যোগ নেয়।
তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার