খুদে ব্লগ লেখার ওয়েবসাইট টুইটার পরিচালনায় নিজের নেওয়া পদক্ষেপের সাফাই গাইলেন টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক বিরল ও দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে টুইটার পরিচালনাসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন মাস্ক। বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনকুবের যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে টুইটারের সদর দপ্তরে বসে প্রায় এক ঘণ্টা বিবিসির প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিনিধি জেমস ক্লেটনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ইলন মাস্কের ওই সাক্ষাৎকার থেকে জানা ছয়টি বিষয় নিচে দেওয়া হলো:
ইলন মাস্ক টুইটারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এতে ঘৃণা ভাষ্যের প্রচার বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। চলতি বছরের শুরুর দিকে টুইটারের ভেতরের কিছু কর্মী বিবিসিকে বলেছিল, কর্মী ছাঁটাই ও মাস্কের কিছু পরিবর্তনের কারণে ব্যবহারকারীকে ট্রল, রাষ্ট্রীয় সহায়তায় ভুয়া তথ্য ছড়ানো ও শিশুদের প্রতি যৌন আচরণ প্রতিরোধের সক্ষমতা এখন টুইটারের নেই। টুইটারকে নিরাপদ রাখতে গত মার্চে চার লাখ অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হয়েছে। এসব ব্যাপারে মাস্কের জবাব এমন—তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে ও পরে ব্যবহারকারীর তথ্যে প্রবেশাধিকার নেই। আর ভুয়া তথ্য ও ঘৃণ্য ভাষ্যের বিষয় সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব বোঝাপড়া আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলন মাস্ক ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারের এক অংশে তিনি টুইটার ব্যবহারে ট্রাম্পের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে নিজের যুক্তি তুলে ধরেন। সহিংসতায় উসকানির অভিযোগে ট্রাম্পকে ওই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
ইলন মাস্ক দায়িত্ব নেওয়ার পর ভুয়া বট অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলার তার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে ও প্ল্যাটফর্মটিতে ভুল তথ্য ছড়ানো কমেছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, আমার অভিজ্ঞতা হলো আগের তুলনায় টুইটারে এখন ভুল তথ্য কম।
মাস্ক টিকটক ব্যবহার করেন না। তবে তিনি অ্যাপটি নিষিদ্ধের বিপক্ষে। নিরাপত্তা উদ্বেগ থেকে চীনা মালিকানাধীন অ্যাপটি নিষিদ্ধের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। আর কিছু দেশ এরই মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের ফোনে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। মাস্ক বলেন, আমি সাধারণত কোনো কিছু নিষিদ্ধের বিপক্ষে। তবে তিনি এ–ও বলেছেন, টিকটক নিষিদ্ধ হলে টুইটারের সুবিধা হবে। কারণ, তখন টুইটারে ব্যবহারকারীর সময় ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।
সাক্ষাৎকারের শুরুতেই তিনি বলেন, এখন যদি কেউ তাঁর কেনা মূল্যে টুইটার কেনার প্রস্তাব দেন, তবে তিনি সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেবেন। তিনি দাবি করেন, তিনি যখন টুইটার কেনেন, তখন প্রতিষ্ঠানটি অলাভজনক ছিল এবং মাত্র কয়েক মাস চলবে এমন পরিস্থিতিতে ছিল।
সম্প্রতি বিবিসিকে ‘সরকারি তহবিলে পরিচালিত’ সংবাদমাধ্যম হিসেবে চিহ্নিত করে টুইটার। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি এ ব্যাপারে আপত্তি তোলে। সাক্ষাৎকারে ইলন মাস্ক এটা পরিবর্তন করে তাদের ‘জনগণের অর্থে পরিচালিত’ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। সাক্ষাৎকার দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর নতুন লেবেল দেখা যায়।
সূত্র: বিবিসি