১৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে বন্ধ থাকার পর গত রোববার (২৮ জুলাই) বিকেল থেকে মুঠোফোনে ফোর-জি ইন্টারনেট চালু করা হয়। মুঠোফোনে ফোর-জি ইন্টারনেট সুবিধা চালুর পর গ্রাহকেরা তিন দিনের জন্য ৫ জিবি ইন্টারনেট বোনাস পাবেন বলে জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। রোববার বেলা তিনটা থেকে মুঠোফোনের ফোর-জি সেবা চালু ও বোনাস ইন্টারনেট পাওয়ার কথা বলা হলেও এখনো সব গ্রাহক সেই বোনাস ইন্টারনেট পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে কয়েকজন ব্যবহারকারীর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো।
রাজধানীর বনশ্রীর বাসিন্দা ডি এম রুম্মান বাংলালিংকের একটি সিম ব্যবহার করেন। তিনি বোনাস ইন্টারনেট চালুর কোনো এসএমএস পাননি। তিনি বলেন, মোবাইলে বোনাস ডেটা নিশ্চিত করার কোনো এসএমএস আসেনি। ২৮ জুলাই সন্ধ্যা ছয়টা ১৭ মিনিটে একটা এসএমএস পেয়েছি, যেখানে বলা হয়েছে, বাংলালিংক ৪-জি চালু হয়েছে ও ৫ জিবি ফ্রি পাব। কিন্তু আমি আসলে ৩০ জুলাই সন্ধ্যা সাতটা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত কোনো বোনাস ইন্টারনেট পাইনি। আমার ভাই মো. নাহিদ টেলিটকের সিম ব্যবহার করে। সে টেলিটকের সিমে কোনো বোনাস ইন্টারনেট পায়নি।
ঢাকার শনির আখড়া থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আনাস ইমরান গ্রামীণফোনের দুটি সিম ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি রোববার রাত ১১টা ২২ মিনিটে বোনাস ইন্টারনেটের বিষয়ে একটি এসএমএস পেয়েছি। তবে আমার আরেকটি সিমে কোনো ইন্টারনেট বোনাসের বার্তা আসেনি। আমি এই সিমে আগে থেকেই কেনা ডেটা ব্যবহার করছি।’ কক্সবাজার থেকে উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী জিহান চৌধুরী বলেন, ‘আমি রবির সিম ব্যবহার করি। গত রোববার থেকে সিমটির মাধ্যমে ৫ গিগাবাইট বোনাস ইন্টারনেট ব্যবহার করছি। যদিও ইন্টারনেটের গতি কিছুটা দুর্বল।’ নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ফাতিমা আলম এয়ারটেলের সিম ব্যবহার করেন। তিনিও ৫ গিগাবাইট ইন্টারনেট বোনাসের এসএমএস পেয়েছেন এবং সেই ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছেন।
বোনাস ইন্টারনেট পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা থেকে স্থপতি ফওজিয়া জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার পর্যন্ত বোনাস ইন্টারনেটের কোনো এসএসএম পাইনি। আমি গ্রামীণফোনের দুটি সিম ব্যবহার করছি। কোনো সিমেই বোনাস আসেনি। বোনাস ব্যবহার তো দূরের কথা, আমার আগে থেকে কেনা ডেটা থাকার পরও আমি ভালোভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছি না।’ সাভারের বাসিন্দা হাসিবুল করিম বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত কোনো বোনাস ইন্টারনেট পাইনি, নিজের ডেটা কিনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছি। এসব বোনাস সবার জন্য না মনে হয়।’
বোনাস ইন্টারনেট পেলেও তা ব্যবহার করতে পারছেন না অনেক গ্রাহক। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফিন রাইফাজ রহমান বলেন, ‘আমি ৫ জিবি বোনাস ইন্টারনেট পেয়েছি, কিন্তু কোনোভাবেই সেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছি না।’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে মোবাইল অ্যাপে বোনাস ইন্টারনেটের ব্যালেন্স দেখতে পেয়েছি। কিন্তু ধীরগতির কারণে সেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছি না।’
বোনাস ইন্টারনেট না পাওয়া বা ধীরগতির ইন্টারনেটের বিষয়ে নাম প্রকাশ্য না করার শর্তে একটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি সংস্থার নির্দেশনার পরপরই সব গ্রাহককে বোনাস ইন্টারনেট ব্যালেন্স দেওয়া হয়েছে। সব অপারেটরই বোনাস ইন্টারনেট দিয়েছে। হয়তো কারিগরি ত্রুটি কিংবা নেটওয়ার্ক দুর্বলতার কারণে বোনাস ইন্টারনেটের এসএমএস পাননি অনেকে। এসএমএস না পেলেও সবার ফোনে বোনাস ইন্টারনেট দেওয়া হয়েছে। বোনাস ইন্টারনেট কেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না, তার নির্দিষ্ট কারণ বলা যাচ্ছে না।