জেনে রাখুন

এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন কী

অনলাইনে যোগাযোগের জন্য যেসব অ্যাপে ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’ সুবিধা থাকে, সেগুলোকে নিরাপদ মনে করা হয়। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা প্রাইভেসিও অটুট থাকে বলে মনে করা হয়। এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন বিষয়টা আসলে কী?

এনক্রিপশন হলো এমন এক পদ্ধতি যেখানে মূল তথ্য বা উপাত্ত পরিবর্তন করে অপর একটি সংকেত (কোড) তৈরি করা হয়, যা সাধারণভাবে পাঠোদ্ধার করা সম্ভব নয়। এই পরিবর্তন এবং পরিবর্তিত কোড পুনরায় পড়ার জন্য বিশেষ অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়।

এনক্রিপ্ট করা কোনো কোড পড়ার পদ্ধতি হলো ডিক্রিপশন। এনক্রিপ্ট ও ডিক্রিপ্ট করার এ বিজ্ঞান হলো ক্রিপ্টোগ্রাফি।

এনক্রিপশন সব সময়ই কম্পিউটারনির্ভর নয়। তবে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপারটিতে আমাদের পরিচয় বাড়ছে। ইন্টারনেটে তথ্য সংরক্ষণ এবং তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এনক্রিপশন একরকম বাধ্যতামূলকই বলা যায়।

তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই মূলত এনক্রিপশনের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। এনক্রিপ্ট করা হয়নি এমন তথ্যগুলোকে বলা হয় সাধারণ লেখা বা প্লেইন টেক্সট এবং এনক্রিপ্ট করার পর সেগুলোকে বলা হয় সাইফার টেক্সট। ইন্টারনেটে সংরক্ষিত সব তথ্যই অন্য কেউ পড়তে পারে বলে ধরে নেওয়া হয়। এসব তথ্য প্লেইন টেক্সট হিসেবে সংরক্ষিত থাকলে সেই তথ্যের অর্থোদ্ধার করা সম্ভব হবে। কিন্তু সাইফার হিসেবে থাকলে পাঠোদ্ধারের জন্য ডিক্রিপ্ট করা ছাড়া ওই সংকেতর অর্থ জানা সম্ভব হবে না।

এনক্রিপশনের জন্য সিমেট্রিক কি পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। এ ক্ষেত্রে তথ্য এনক্রিপ্ট ও ডিক্রিপ্ট করার জন্য একই কি ব্যবহার করা হয়। এনক্রিপশনের অপর একটি ধরন হলো পাবলিক কি এনক্রিপশন। এখানে এনক্রিপ্ট ও ডিক্রিপ্ট করার জন্য আলাদা আলাদা কি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে এনক্রিপশনের জন্য দুটি কি তৈরি করা হয়। একটি কি ব্যবহার করে এনক্রিপ্ট করা হয় এবং অপরটি ব্যবহার করা হয় সেটি ডিক্রিপ্ট করার জন্য, মানে পড়ার জন্য। কম্পিউটার বা ইন্টারনেটে তথ্য সংরক্ষণের জন্য মূলত পাবলিক কি এনক্রিপশনেরই বিভিন্ন অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়।

বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় বার্তা আদান-প্রদান করার প্রায় সব অ্যাপ যেমন ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, সিগনাল ইত্যাদিতে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহার করা হয়।

এর অর্থ হলো এসব অ্যাপ থেকে পাঠানো সব লেখা, ছবি, ভিডিও, ফোনকল বা অন্যান্য ফাইল কেবল যাকে পাঠানো হচ্ছে, সে ছাড়া আর কেউই পড়তে পারবে না। এই পদ্ধতি নিশ্চিত করছে যে আপনার পাঠানো কোনো তথ্য অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ জেনে যাচ্ছে না। শুধু মেসেঞ্জারই নয়, ই-মেইলেও এই এনক্রিপশন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।