অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবালও উজ্জ্বলতা হারাচ্ছে
অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবালও উজ্জ্বলতা হারাচ্ছে

বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ৪০ শতাংশ প্রবাল

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিলুপ্তির হুমকিতে আছে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী। বিলুপ্তির ঝুঁকির তালিকা দিন দিন বড় হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা সেই তালিকায় বিভিন্ন ধরনের প্রবালের অবস্থা সম্পর্কে শঙ্কার তথ্য দিয়েছেন। বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশের বেশি প্রবালের বাসস্থান ও বাস্তুতন্ত্র তীব্র হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। নতুন গবেষণা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের প্রবাল প্রাচীরের একটি বড় অংশ বেঁচে থাকবে কি না, তার সম্ভাবনা কমিয়ে দিচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর রেড লিস্ট অব থ্রেটেনড স্পিসিস অনুসারে, বিশ্বব্যাপী রিফ-বিল্ডিং প্রবাল প্রজাতির প্রায় ৪৪ শতাংশ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। বিভিন্ন প্রবাল প্রজাতির বিরুদ্ধে প্রধান হুমকির মধ্যে রয়েছে ব্লিচিং, তেলদূষণ ও বিভিন্ন রোগের প্রভাব। অন্যান্য হুমকির মধ্যে রয়েছে মাছ ধরা, গভীর সমুদ্রে খনন, তেল ও গ্যাসের জন্য খনন বা গভীর সমুদ্রে স্থাপনা করার মতো কার্যক্রম প্রবালদের বাস্তুতন্ত্রের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে।

আইইউসিএন ২০০৮ সালে ৮৯২টি উষ্ণ পানির রিফ-বিল্ডিং প্রবাল প্রজাতির অবস্থা বর্ণনা করে। তখন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে এই ঝুঁকির হার বেড়েছে। উষ্ণায়নের ঘটনা ও ব্লিচিংয়ের কারণে ঝুঁকি বাড়ছে। আইইউসিএন দুটি প্রবালের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। স্ট্যাগহর্ন প্রবাল ও এলখর্ন প্রবাল ক্যারিবীয় অঞ্চলের দুটি বিপন্ন প্রজাতির প্রবাল। উষ্ণতা বৃদ্ধি, দূষণ, ঘূর্ণিঝড় ও প্রবাল রোগের কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

এ বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নোয়া) বিশ্বের চতুর্থ বৈশ্বিক প্রবাল ব্লিচিংয়ের ঘটনার কথা প্রকাশ করে। আগামী কয়েক মাসে আরও কয়েকটি প্রবাল ব্লিচিংয়ের ঘটনা দেখা যাবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। রাসায়নিক বা প্রাকৃতিক কারণে প্রবাল তার রঙের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে, এ বিষয়টিকে ব্লিচিং বলা হয়।

প্রবাল রক্ষা করা না গেলে উপকূলীয় অনেক মাছ ও প্রাণী হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রবাল প্রাচীর উপকূলরেখা ও উপকূলীয় আবাসস্থলকে স্থিতিশীল রাখছে। এসব প্রাচীর ধ্বংস হলে সমুদ্রতীরবর্তী এলাকার বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করেন বিজ্ঞানীরা। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসে বড় ভূমিকা রাখতে পারে প্রবাল প্রাচীর। সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে বিভিন্ন দেশের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: এবিসি নিউজ