বেসিসে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে
বেসিসে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে

এবার বেসিসে প্রশাসক নিয়োগ দিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

দেশের সফটওয়্যার খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসে (বেসিস) প্রশাসক হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ মেহেদী হাসানকে নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তিনি পরবর্তী ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। আজ বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ থেকে প্রশাসক নিয়োগের এই অফিস আদেশ জারি করা হয়।

বেসিসে নিযুক্ত প্রশাসক মুহম্মদ মেহেদী হাসান

বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহর সই করা আদেশে প্রশাসক বসানোর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি নিবন্ধিত বাণিজ্য সংগঠন। গত ১৭ অক্টোবর বেসিসের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এবং ১৯ অক্টোবর সহসভাপতি (অর্থ) ইকবাল আহমেদ ফখরুল হাসান ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন মর্মে জানা গেলেও তাঁদের পদত্যাগপত্র মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠনের কাছে পাঠানো হয়নি। এরপর বেসিসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলেও পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের গঠনপ্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ ছিল। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা কাউন্সিল ও বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদ এবং সাধারণ সদস্যদের প্রতিনিধিদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ নভেম্বর শুনানি করা হলেও পূর্বের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপস্থিত হননি এবং পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের চলমান অস্থিরতা ও অসন্তোষের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং এ পরিস্থিতিতে বেসিসের পরিচালনা পর্ষদ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। আর তাই বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২–এর ১৭ ধারা মোতাবেক সংগঠনটির পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সরকারের অনুমোদনক্রমে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে সর্বশেষ কমিটির সভাপতি এম রাশিদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বেসিসের নির্বাহী পরিষদের জরুরি সভার মাধ্যমে দায়িত্ব নিই। আমরা চেষ্টা করেছি সব নিয়মকানুন মেনেই কাজ করতে। আমাদের সব কার্যক্রমের তথ্যাদি আমরা মন্ত্রণালয়কে নিয়মিত অবহিত করেছি। আমরা সবাইকে নিয়ে এক হয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা চাই, প্রশাসক তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।’

বেসিসের সভাপতি পদত্যাগ করার পর গত ৩০ অক্টোবর বেসিসের নির্বাহী কমিটির সভায় জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম রাশিদুল হাসানকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

বেসিসের সদ্য বিদায়ী কমিটির পরিচালক বিপ্লব জি রাহুল বলেন, ‘আমরা নতুন প্রশাসকের নিয়োগসম্পর্কিত সরকারি নোটিশ পেয়েছি। আশা করছি, নতুন প্রশাসক নির্ধারিত ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়মিত কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করে আসছে। প্রতি সপ্তাহে আমাদের কার্যক্রম তাদের সঙ্গে শেয়ার করা হচ্ছে।’

গত মে মাসে অনুষ্ঠিত বেসিসের ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে রাসেল টি আহমেদের নেতৃত্বাধীন ‘ওয়ান টিম’ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। বেসিসের ১১টি পদে ৩টি প্যানেলে ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এরই মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ই-ক্যাব) প্রশাসক বসিয়েছে সরকার।