স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো বার্তা পড়ার সুযোগ পেতে আইন করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। নতুন এ আইনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আদান-প্রদান করা সব বার্তা স্ক্যান করার সুযোগ পাবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। এমনকি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদান-প্রদান করা এনক্রিপ্টেড বার্তাও পড়তে পারবে তারা। শিশুদের যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে শিগগিরই এ আইন প্রণয়নের জন্য ভোটের আয়োজন করা হবে।
প্রস্তাবিত আইনকে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন প্রযুক্তিতে পাঠানো বার্তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করছেন প্রযুক্তিবিদেরা। এ বিষয়ে সিগন্যাল অ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান সিগন্যাল ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট মেরেডিথ হুইটেকার খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) বলেন, নতুন আইন এনক্রিপশন ব্যবস্থাকে দুর্বল করে প্রযুক্তিগত সংকট তৈরি করবে। প্রস্তাবিত আইনটি পাস হলে সিগন্যালের এনক্রিপশন ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যাবে। এনক্রিপশনের আগে স্ক্যান করা হোক বা না হোক, নতুন সিস্টেমে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হবে। নতুন আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে হ্যাকিং বাড়বে। ব্যবহারকারীদের ওপরে রাষ্ট্রীয় শোষণ বাড়তে পারে। আইনটি বার্তা পাঠানোর জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা দুর্বল করে দেবে। আর তাই আইন পাসের পর সিগন্যাল অ্যাপ ইউরোপীয় ইউনিয়নের এলাকায় কাজ বন্ধ করে দেবে।
ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড টেকনোলজি ও ইন্টারনেট ব্রাউজার মজিলাসহ বেশ কয়েকটি সংস্থাও আইনটি নিয়ে যৌথ বিবৃতিতে প্রকাশ করেছে। সংস্থাগুলো ব্যবহারকারীর বার্তা স্ক্যান করে এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অনুরোধ করেছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের জার্মান সদস্য প্যাট্রিক ব্রেয়ারও বিলটি সম্পর্কে বলেন, ব্যবহারকারীর চ্যাট ও ছবি নির্বিচার অনুসন্ধান করলে আমাদের ব্যক্তিগত ও মৌলিক অধিকার নষ্ট হবে। শিশু ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের জন্য এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যা আসলেই কার্যকর হয়।
বেলজিয়ামসহ বেশ কয়েকটি দেশ নতুন আইনটি বাস্তবায়নে বেশি তৎপর। গত বছর আইনটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছিল বলে পাস হয়নি। অন্যদিকে ইউরোপীয় ডিজিটাল রাইটস গ্রুপের এক জরিপে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৬৬ শতাংশ তরুণ তাঁদের বার্তা স্ক্যান করার অনুমতি দেওয়ার নীতির সঙ্গে একমত নন।
সূত্র: দ্য ভার্জ