লাল গ্রহ মঙ্গলে মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা কাজ করছে। নভোচারীদের নিরাপদে অভিযানের জন্য নভোযান তৈরি থেকে শুরু করে অনেক গবেষণা চলছে। নতুন এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলগ্রহে অভিযাত্রীদের কিডনি বিকলসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে। ২৪ নভোচারীর যাঁরা আগে চাঁদে ভ্রমণ করেছেন, তাঁদের তথ্য বিশ্লেষণ করে সমস্যার ভবিষ্যদ্বাণীর কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। এখন পর্যন্ত চন্দ্রের সীমানায় গিয়েছেন ২৪ নভোচারী, ১২ জন চাঁদে নেমেছেন। চন্দ্র জয় করে ফিরে আসার পরে ২৪ নভোচারীর বেশির ভাগেরই কিডনিসংক্রান্ত সমস্যা দেখা যায়। মঙ্গলগ্রহে যাওয়া মহাকাশচারীদের কিডনিতে পাথর হতে পারে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
চাঁদে যাওয়া বেশির ভাগ নভোচারী চন্দ্র ভ্রমণে ৬ থেকে ১২ দিন মহাকাশে অবস্থান করেন। সাধারণ হিসাবে মঙ্গলে যেতে প্রায় ৯ মাসের মতো সময় লাগবে। আবার ফিরে আসতে ৯ মাস সময় লাগবে। এই দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকার কারণে নভোচারীদের কিডনিসংক্রান্ত সমস্যা তৈরি হতে পারে। গ্যালাকটিক বিকিরণের সংস্পর্শে গেলে কিডনির অনেক বেশি ক্ষতি হবে, আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। মহাকাশচারীদের কিডনি রক্ষার জন্য নতুন ওষুধ তৈরি করা না হলে ভবিষ্যতে লাল গ্রহে যাওয়ার অভিযানে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ, লন্ডনের বিজ্ঞানীরা মহাকাশ ভ্রমণকারীদের ওপর সম্ভাব্য স্বাস্থ্যের প্রভাব নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করেন। নেচার কমিউনিকেশন সাময়িকীতে কিডনির ওপর প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণায় ৪০টির বেশি প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা অংশ নেন।
বিজ্ঞানী কিথ সিউ বলেন, কিডনি রক্ষার নতুন উপায় তৈরি না হলে মহাকাশচারীরা নতুন সমস্যায় পড়বেন। বিকিরণের কারণে কিডনির ক্ষতি হয়। গভীর মহাকাশ থেকে আসা গ্যালাকটিক কসমিক রেডিয়েশনের (জিসিআর) সংস্পর্শে আসার ফলে স্বাস্থ্যের সংকট তৈরি হয়। গবেষকেরা ১৯৭০ সাল থেকেই মহাশূন্যে মানব উপস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা জানেন। ১৯৬৯ সালে চন্দ্রজয়ের পরে নভোচারীদের মধ্যে হাড়ের ভর হ্রাস, হৃৎপিণ্ড ও দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়াসহ কিডনিতে পাথর তৈরির সমস্যা দেখতে পান তাঁরা।
সূত্র: ডেইলি মেইল