ট্রিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান বললে অনেকেই হয়তো প্রতিষ্ঠানটির বিশালত্ব ঠিকমতো বুঝতে পারেন না। তবে যদি বলা হয় প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন এক লাখ কোটি মার্কিন ডলার, তবে চোখ কপালে উঠবে অনেকেরই। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের নাম জেনে নেওয়া যাক।
১৯৭৫ সালে যাত্রা শুরু করা মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের বাজার মূলধনের পরিমাণ বর্তমানে তিন ট্রিলিয়ন (তিন লাখ কোটি মার্কিন ডলার)। শুধু ২০২৩ সালেই প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করেছে ২১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিষ্ঠানটির কর্মিসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ২১ হাজার।
২ লাখ ৮২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বাজার মূলধন নিয়ে মাইক্রোসফটের পরই রয়েছে অ্যাপল। ১৯৭৬ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নতুন মডেলের আইফোন বাজারে আনে। ক্রেতাদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা নতুন মডেলের আইফোন বিক্রিসহ বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করে গত বছরের শেষ তিন মাসেই ১২০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানটি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারাতে অবস্থিত সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা এনভিডিয়ার বাজার মূলধনের পরিমাণ ১ লাখ ৭৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটির তৈরি দ্রুতগতির চিপ বিভিন্ন সুপার কম্পিউটার, তথ্যভান্ডার এবং এআই মডেল প্রশিক্ষণের মতো অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মিসংখ্যা ২৯ হাজার ৬০০ জন। গত বছর প্রায় ৬০ দশমিক ৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৯৪ সালে ই–কমার্স সাইট অ্যামাজন যাত্রা শুরু করেছিল অনলাইনে বই বিক্রি করার মধ্য দিয়ে। বর্তমানে ই-কমার্সের পাশাপাশি ক্লাউড কম্পিউটিং, অনলাইন বিজ্ঞাপন, ডিজিটাল স্ট্রিমিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলার মূলধনের এই প্রতিষ্ঠানের কর্মিসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে।
সার্চ জায়ান্ট গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের বাজার মূলধনের পরিমাণ বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৫ সাল থেকে গুগলের সব ধরনের ব্যবসা অ্যালফাবেটের অধীনে পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি আয় করেছে ৩০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সারা বিশ্বে অ্যালফাবেটের ১ লাখ ৮২ হাজার কর্মী রয়েছে।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, থ্রেডস অ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার বর্তমান বাজার মূলধনের পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালে মেটার আয়ের পরিমান ছিল ১৩৪.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৬৭ হাজার কর্মী কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বা টিএসএমসি চিপ নির্মাণ জগতে আলোচিত প্রতিষ্ঠান। সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা এ প্রতিষ্ঠানটি স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, চিকিৎসাযন্ত্র থেকে শুরু করে মিসাইল সিস্টেমের জন্য মাইক্রো চিপ তৈরি করে। ১৯৮৭ সালে যাত্রা করা এ প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন ৬৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিষ্ঠানটি গত বছর প্রায় ৭৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। টিএসএমসির কর্মিসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৭৩ হাজার।
ইলন মাস্কের মালিকানাধীন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার বাজার মূলধন ৬৩৬ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালে ৯৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটিতে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে।
মার্কিন চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ব্রডকমের বাজার মূলধন ৫৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেমিকন্ডাক্টর, এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যারসহ নিরাপত্তা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটির কর্মিসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান স্যামসাংয়ের বাজার মূলধনের পরিমাণ ৩৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। টেলিভিশন, স্মার্টফোন থেকে শুরু করে গৃহস্থালি বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করা প্রতিষ্ঠানটির কর্মিসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও উইকিপিডিয়া