কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’ যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দ্রুত ও নির্ভুলভাবে জানাতে পারে। ব্যবহারকারীর নির্দেশমতো নিজ থেকে বার্তা, নিবন্ধ লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজও করতে পারে চ্যাটবটটি। কিন্তু জনপ্রিয় চ্যাটজিপিটির কারণে ঝুঁকিতে পড়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাজীবীরা। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, চ্যাটজিপিটির কারণে কাজ কমছে মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সারদের। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে লেখালেখি ও প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষ ফ্রিল্যান্সাররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্লেষকেরা দুটি দলে বিভক্ত। একদল মনে করে, এআই ভবিষ্যতে বিভিন্ন পেশাজীবীদের চাকরি ঝুঁকিতে ফেলবে। অন্যদলের ধারণা, চাকরি ঝুঁকিতে ফেলার পরিবর্তে বিভিন্ন পেশার কাজ সহজ করবে। তবে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের চালানো নতুন এ গবেষণায় দেখা গেছে, চ্যাটজিপিটি চালুর পর ফ্রিল্যান্সারদের কাজ ২১ শতাংশ কমেছে। কাজ কমার এই হার আরও বাড়বে।
বিভিন্ন পেশার কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রভাব পড়ছে বলে স্বীকার করেছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মার্কিন কর্মশক্তির ৮০ শতাংশকে প্রভাবিত করছে। শুধু তা–ই নয়, এরই মধ্যে দেশটির ১০ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে গবেষক সোনম জিন্দাল বলেন, মানুষের বুদ্ধিমত্তা আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মূল ভিত্তি। এআই–নির্ভর অর্থনীতিতে মানুষের বুদ্ধি ব্যবহৃত হয় এমন কাজের সুযোগ বাড়বে। এআইয়ের কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চাকরির ক্ষেত্র ছোট হয়ে আসছে। তবে দক্ষতানির্ভর অন্য সব অনলাইন চাকরির চাহিদা বাড়বে। সেদিকে সবার মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
ইন্টারনেটে আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাওয়ার ওয়েবসাইট আপওয়ার্কের রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেলি মোনাহান বলেন, লেখালেখি ও প্রোগ্রামিংভিত্তিক বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স কাজ কমে যাচ্ছে। এখন এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য অনলাইন ডেটা প্রসেসিং ও লেখার কাজ বাড়ছে। যদিও এসব কাজে আয় অনেক কম। তবে এআই বট তৈরি ও বিকাশে সহায়তা করে এমন কাজের চাহিদা থাকবে।
সূত্র: কোয়ার্টজ ডটকম