সফল ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা সুবীর নকরেক
সফল ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা সুবীর নকরেক

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য চ্যালেঞ্জ কী কী

বিশ্বজুড়ে দিন দিন বাড়ছে ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবীদের কাজের চাহিদা। ঘরে বসে কাজের সুযোগ থাকায় বাংলাদেশেও ফ্রিল্যান্স কাজ বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু ফ্রিল্যান্স কাজ শেখার জন্য অন্যদের দেখাদেখি না বুঝে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন অনেকেই। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়েন তাঁরা। ফ্রিল্যান্স কাজ করার জন্য প্রথমেই নিজের ভালো লাগার বিষয় নির্বাচন করতে হবে। এরপর সে বিষয়ে ঘরে বসে বা বিভিন্ন প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

বর্তমানে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও সম্পাদনা, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, মোশন গ্রাফিকস, অ্যাকাউন্টস ম্যানেজমেন্ট, গেম ও অ্যাপ তৈরির বেশ চাহিদা রয়েছে। আর তাই এসব বিষয়ে ঘরে বসে বা বিভিন্ন প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্স কাজ শুরু করার সময় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় নতুন ফ্রিল্যান্সারদের যেসব বিষয় মেনে চলতে হবে, তা জেনে নেওয়া যাক।

নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন

ফ্রিল্যান্স কাজ করার আগে অবশ্যই নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে (অনলাইন কাজের বাজার) কাজ খুঁজতে হবে। এ জন্য ছয় মাস থেকে এক বছর নিজেকে নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। শুরুতে কাজ বা আয় কম হলেও ধীরে ধীরে কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

কাজ জানি কিন্তু কাজ পাওয়া যায় না

নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা থাকলেও অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ পান না অনেকেই। এতে দমে গেলে হবে না। অনলাইন মার্কেটপ্লেসের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও নিজেদের কাজের দক্ষতা প্রচার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, অনলাইনে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং খুবই জরুরি। এ জন্য পেশাজীবীদের যোগাযোগের সাইট লিংকডইনসহ ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। বিভিন্ন অনলাইন বৈঠক, ফোরাম ও সেমিনারেও অংশ নিতে হবে।

নিজের পরিচয় ও দক্ষতা তুলে ধরা

অনলাইন মার্কেটপ্লেসে নিজের পরিচয় ও দক্ষতা তুলে ধরার পাশাপাশি সফল ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হবে। বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করলে অনেক সময় কাজ পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। এ জন্য আগে থেকেই নিজের তৈরি করা বিভিন্ন কাজের বিস্তারিত তথ্য এবং পোর্টফোলিও তৈরি করে রাখতে হবে।

নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রচারণা

নিজের পরিচিতি বিস্তারিতভাবে অন্যদের কাছে প্রচারের জন্য ওয়েবসাইট বেশ কার্যকর মাধ্যম। এ জন্য একটি ওয়েবসাইট চালু করে নিজের দক্ষতা ও কাজগুলো তুলে ধরতে হবে। এর ফলে কোনো ক্লায়েন্ট কাজ দেওয়ার আগে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে পারবেন।

কাজের বিস্তারিত তথ্য জানা

অনেকেই অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্টদের চাহিদা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা না নিয়েই কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ কারণে তাঁরা কাজ পান না। আবার কাজ পেলেও নির্ধারিত সময়ে সঠিকভাবে কাজ জমা দিতে পারেন না। ফলে ক্লায়েন্টের কাছ থেকে কম রেটিং পাওয়ার কারণে অন্য ক্লায়েন্টো আর কাজ দেন না। একসময় হতাশ হয়ে পড়েন তাঁরা। তবে হতাশ হলে হবে না, দক্ষতা এবং আগ্রহ থাকলে একসময় ঠিকই ফ্রিল্যান্স কাজ করে সফল হওয়া সম্ভব।

লেখক: ফ্রিল্যান্সার ও তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা