২০১২ সাল থেকে মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছেন সুমন সাহা। ২০১৩ সালের শুরুতে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নাল পয়েন্টারের আইপ্যাড অ্যাপ্লিকেশন পরীক্ষার জন্য সারা বিশ্ব থেকে ৫২ জন আবেদন করলেও মাত্র ২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে সুযোগ পান সুমন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সুমনকে। ২০১৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বাংলাদেশে বসে কাজ শুরু করেন তিনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি শাখা অফিস রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এমনই একটি শাখা অফিসের কর্মী হিসেবে এবার স্পেনে বসে কাজ করবেন সুমন সাহা। সম্প্রতি স্পেনে কাজ করার ওয়ার্ক ও রেসিডেন্ট পারমিট পেয়েছেন তিনি।
সুমন সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর খুব ইচ্ছা। আর তাই সহজে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের জন্য ইউরোপে বসে কাজ করার বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নিতে থাকি। এ জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে একবার ইউরোপ ভ্রমণও করি। তবে প্রচণ্ড ঠান্ডা বা শীতপ্রধান দেশকে আমি খুব একটা পছন্দ করি না, তাই সিদ্ধান্ত নিলাম স্পেনে যাওয়ার। স্পেনে বাংলাদেশের দূতাবাসও রয়েছে। এরপর স্পেনে এসে কাজ করার আবেদন জমা দেওয়ার ২২ কর্মদিবসের মধ্যে স্পেনের ওয়ার্ক ও রেসিডেন্ট পারমিট পেয়ে যাই। সম্ভবত বাংলাদেশ থেকে আমিই প্রথম এবং একমাত্র ফ্রিল্যান্সার যে স্পেনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। স্পেনেও আমি ঘরে থেকে অফিসের সব কাজ করতে পারি।’
সুমন সাহার বাড়ি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার আলীনগর গ্রামে। বাবা হরিপদ চন্দ্র সাহা ও মা পুষ্প রানী সাহা। তিন ভাই–বোনের মধ্যে সবার ছোট সুমন। চরসিন্দুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করে সুমন ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। এরপর টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষযে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি।
বাংলাদেশে প্রচলিত চাকরির সুযোগ ছিল সুমন সাহার। তবে সেটি না করে হয়েছেন ফ্রিল্যান্সার। ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই সুমন সাহাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। সে সময় তাঁর মাসে আয় ছিল কমবেশি পাঁচ থেকে ছয় হাজার ডলার। সুমন সাহা মূলত আপওয়ার্কে সফটওয়্যারের মান নিয়ন্ত্রণ, কারিগরি সেবা এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করেন। স্ত্রী সন্ধ্যা রায়ও একজন ফ্রিল্যান্সার ছিলেন। দুই ছেলে সার্থক ও সম্পূর্ণ সাহাকে নিয়ে তাঁদের ছোট পরিবার।