নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত ‘উইমেন ইন টেক’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ‘টিম এমপাওয়ার’ দল। মাহমুদা নাঈম, সুমাইয়া তারিক, প্রিমা সরকার, বুশরা হাসান ও পুষ্পিতা খানের সমন্বয়ে গড়া দলটি ‘ধারা’ নামের উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন করে তিন লাখ টাকার পুরস্কার পেয়েছে। চীনের টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছে যথাক্রমে ‘টিম টেরা ওয়াট’ ও ‘স্পার্কল স্কোয়াড’। ‘টেরা বিন’ ও ‘সোলনেট’ নামের প্রকল্প উপস্থাপন করে যথাক্রমে দুই লাখ এবং এক লাখ টাকার পুরস্কার পেয়েছে দল দুটি। এ ছাড়াও ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের জন্য কায়সারী ফেরদৌস, মাহমুদা নাঈম, সুমাইয়া তারিক ও সাফরিনা কবির সেরা প্রতিযোগী নির্বাচিত হয়েছেন। পুরস্কার হিসেবে তাঁরা পেয়েছেন চীনে গিয়ে উদ্ভাবনী উদ্যোগ (স্টার্টআপ) বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতায় ৭৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। নির্বাচিত অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে প্রথমে চার দিনের বুটক্যাম্প আয়োজন করা হয়। এরপর প্রতিযোগীরা দুই মাস ধরে নিজেদের উদ্ভাবনী প্রকল্প তৈরি করে জমা দেন। পরে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রকল্পগুলোর সম্ভাবনা যাচাই-বাছাই করে বিজয়ী নির্বাচন করা হয়।
চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পুরস্কার পাওয়া ‘ধারা’ প্রকল্পের মাধ্যমে ভবনের ছাদে সৌরশক্তির মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে পানি পরিশোধন করা যাবে। ফলে ভবনে বসবাসকারীরা সবাই কম খরচে বিশুদ্ধ পানি পাবেন। প্রথম রানার্সআপ পুরস্কার পাওয়া ‘টেরা বিন’ প্রকল্পের মাধ্যমে সোলার কম্পোস্টার তৈরি করে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা যাবে। দ্বিতীয় রানার্সআপ পুরস্কার পাওয়া ‘সোলনেট’ প্রকল্পের মাধ্যমে কম খরচে সোলার প্যান্ট তৈরির সুযোগ মিলবে।
অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহ্মেদ জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা চাইলে বিনিয়োগ তহবিল থেকে সহায়তা পেতে পারেন। বাংলাদেশে ল্যাপটপ তৈরির পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে হুয়াওয়েকে গুরুত্ব বাড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, আজকের প্রতিযোগীরা বিশ্বমানের বিজ্ঞানী, অধ্যাপক ও প্রযুক্তিবিদ হয়ে উঠবে। বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক নারী যাতে প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে আসতে পারেন, সে লক্ষ্যে চীন বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য অংশীদার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জারা জাবীন মাহবুব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে ইউনেসকোর অফিসপ্রধান ও প্রতিনিধি সুজান ভাইজ ও হুয়াওয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং হুয়াওয়ে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্যান জুনফেং।