আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন

মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীরা থাকেন কীভাবে

মহাকাশে গিয়ে আটকে পড়ার ঘটনা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি মনে হতে পারে অনেকের কাছেই। তবে এমন ঘটনা এবার সত্যিই ঘটেছে। মহাকাশযানের ত্রুটির কারণে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর। গত ২২ জুন দুই নভোচারীর পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা থাকলেও তাঁদের বহনকারী বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানের হিলিয়াম গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় (লিকেজ) আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকা পড়েছেন তাঁরা। কবে নাগাদ তাঁরা পৃথিবীতে ফিরে আসবেন, তা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেনি নাসা।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির ধারণা, সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোরের পৃথিবীতে ফিরে আসতে আরও আট মাস সময় লাগতে পারে। আর তাই মহাকাশ স্টেশনে আটকা পড়া দুই নভোচারীর দিন কেমন কাটছে, তা জানতে আগ্রহী অনেকেই। মহাকাশ স্টেশনে মহাকাশচারীদের জন্য কী কী সুবিধা রয়েছে, তা দেখে নেওয়া যাক।

নাসার নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনি উইলিয়াম (ডানে)
ফোন বুথের সমান স্লিপ স্টেশনে ঘুমাতে হয় নভোচারীদের

ফোন বুথের সমান থাকার ঘর

ভালো ঘুমের জন্য খোলামেলা ঘর বা নরম বিছানা ও বালিশ ব্যবহার করেন অনেকেই। বিছানা ও বালিশ ঠিক না হলে ঘুমের ব্যাঘাতের পাশাপাশি ঘাড় বা পিঠে ব্যথা হয়। কিন্তু মহাকাশ স্টেশনের চিত্রটা কঠিন এবং ভয়াবহ। মহাকাশ স্টেশনে ‘জিরো গ্রাভিটি’ বা ওজনহীনতার পরিবেশ থাকায় আয়েশ করে শোয়া বা বালিশে মাথা রাখা খুবই কঠিন। আর তাই মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীরা স্লিপ স্টেশন নামে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ঘুমান। স্লিপ স্টেশনটি আকারে একটি ফোন বুথের সমান। শুধু তা–ই নয়, নিজেদের শরীর স্থির রাখতে বিশেষ ধরনের স্লিপিং ব্যাগের ওপর ঘুমাতে হয় নভোচারীদের।

মহাকাশ স্টেশনে দাঁত ব্রাশ করা খুবই কঠিন

গোসল ও দাঁত ব্রাশ

মহাকাশ স্টেশনে গোসল, দাঁত ব্রাশ করা ও হাত-মুখ ধোয়া খুবই কঠিন। গ্রাভিটি জিরো হওয়ায় এখানে পানি পৃথিবীর মতো নিচের দিকে পড়ে না। ফলে পৃথিবীর মতো পানি ঢেলে গোসল করার সুযোগ নেই মহাকাশ স্টেশনে। তাই কাপড় পানিতে ভিজিয়ে সেটি দিয়ে গা মুছে থাকেন নভোচারীরা। চুল পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করতে হয় বিশেষ ধরনের শ্যাম্পু। এই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে পানি দিয়ে চুল ধুতে  হয় না। একইভাবে দাঁতও ব্রাশ করতে হয় নভোচারীদের।

শৌচাগার

মহাকাশ স্টেশনের শৌচাগারকে মজা করে ‘অরবিটাল আউটহাউস’ নামে ডাকেন নভোচারীরা। এই শৌচাগারের দুটি অংশ থাকে। একটি অংশ তরল এবং অপর কঠিন বর্জ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়। শৌচাগারে মল ব্যাগে জমা রাখা হলেও বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে মূত্র থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণ করা হয়।
সূত্র: ডেইলি মেইল ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস