গত বছরের শেষ দিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’ ছাড়া হয়। এর মধ্য দিয়ে এআই প্রযুক্তির নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। চ্যাটজিপিটি আসার পর থেকে চাকরির বাজারে এআইয়ের প্রভাব নিয়ে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে যে ভবিষ্যতে চাকরিতে মানুষের জায়গা দখলে নেবে এআই প্রযুক্তি।
এই প্রযুক্তি কবিতা, চিত্রনাট্যও পরীক্ষা করতে পারে। কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষ যেভাবে যোগাযোগ করে তার পুরোটাই অনুকরণ করতে পারে। ক্রেতাকে সেবা দেওয়া, কপিরাইট, এমনকি আইনি সেবা দেওয়ার চাকরির ক্ষেত্রগুলোতে খুব দ্রুতই মানুষের স্থান এআই প্রযুক্তি দখলে নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মাইক্রোসফট চ্যাটজিপিটিতে এক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষ এখন যেভাবে যোগাযোগ করে তা পুরোপুরি বদলে দেবে এই প্রযুক্তি।
এআই প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞ ও আলটিমার সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রধান রিচার্ড ডিভের ডেইলি মেইলকে বলেন, ‘কর্মশক্তির ২০ শতাংশ চ্যাটজিপিটি দখলে নিতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। চ্যাটজিপিটি কোনো পাগলামি নয়। এটি প্রযুক্তির নতুন বিপ্লব। রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার কাজের জন্য আসছে না। তবে একজন মানুষ রোবট সঙ্গে নিয়ে তা করবে।’
ডিভের বলেন, মানুষের জায়গা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাতারাতি রোবটের দখলে চলে যাবে না। প্রথম ধাক্কাটা কম অভিজ্ঞ মানুষদের দেবে—যাঁরা দৈনন্দিন কাজকর্মে এআই প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছেন।
জাউন্স এআইয়ের মতো কিছু প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে ‘মানুষের’ কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে হবে—এমন এআই সমাধানের প্রস্তাব দিচ্ছে। জাউন্স বিনা মূল্যে আনলিমিটেড এআই কপিরাইটের প্রতিশ্রুতিও দেয়।
আর ডুনটপে সংস্থাটি গতি সীমা লঙ্ঘনকারী চালকদের জরিমানা থেকে বাঁচাতে আদালতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে লিখিত পরীক্ষা সফলভাবে শেষ করে চাকরির এক সাক্ষাৎকারে সংক্ষিপ্ত তালিকায় চ্যাটজিপিটি স্থান করে নিয়েছে।
এ ছাড়া আর্থিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টুইগ তাদের কিছু কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে। তারা বিপণন, অর্থ ও ব্যবসার অন্যান্য কাজেও এআই ব্যবহার করছে।
ডিভের জানিয়েছেন, তিনি বেশ কয়েকজনকে চেনেন, যাঁরা তাঁদের চাকরিতে ইতিমধ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। তিনি সতর্ক করেন, ‘আমরা শুধু একটি এআই বিপ্লবের শুরুতে আছি। চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের সম্ভাবনা অন্তহীন।’
তবে ডিভের এও বলেছেন, আপাতত সৃজনশীল পেশার মানুষজন তাঁদের চাকরি নিয়ে নিরাপদ থাকা উচিত। উদ্বিগ্ন না হয়ে সৃজনশীল পেশাদারদের প্রযুক্তিটি গ্রহণ করা উচিত এবং নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে এটি ব্যবহার করা উচিত।
সূত্র: ডেইলি মেইল