ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কাজে স্মার্টফোনেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণ করেন অনেকেই। আর তাই ফোনে গোপনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করতে থাকে হ্যাকাররা। ফোনে ম্যালওয়্যার সংক্রমণ হয়েছে কি না, তার কয়েকটি লক্ষণ জেনে নেওয়া যাক।
ফোনের পর্দায় হঠাৎ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বা অপরিচিত অ্যাপের উপস্থিতি ম্যালওয়্যার সংক্রমণের অন্যতম লক্ষণ। আর তাই প্রথমেই ফোনে থাকা অ্যাপের তালিকা যাচাই করতে হবে। অপরিচিত অ্যাপ থাকলেই বুঝতে হবে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করেছে। শুধু তা–ই নয়, ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন দেখা গেলেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক বা অপরিচিত ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ নামালেই ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে হ্যাকারদের ইচ্ছেমতো বিজ্ঞাপন দেখানোর পাশাপাশি গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে পাঠাতে থাকে।
একটানা দীর্ঘ সময় ভিডিও দেখা বা গেম খেললে ফোন কিছুটা গরম হওয়া স্বাভাবিক। তবে সাধারণ কাজ করার সময়ও যদি ফোন গরম হতে থাকে বা ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায়, তবে বুঝতে হবে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করেছে। কারণ, ম্যালওয়্যারযুক্ত অ্যাপ ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে সব সময় কাজ করতে থাকে। এর ফলে ফোনের ব্যাটারি বেশি খরচ হয় এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
ম্যালওয়্যার সাধারণত ফোনের প্রসেসর ও মেমোরি ব্যবহার করে সার্বক্ষণিক তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। এর ফলে ফোনে অন্য কাজ করতে সময় বেশি প্রয়োজন হয়। এমনকি মাঝেমধ্যে হঠাৎ করে ফোন হ্যাং হয়ে যায়। আর তাই সাধারণ কাজ করার সময় ফোনের গতি কমে গেলে বা হ্যাং হলে বুঝতে হবে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করেছে।
নেটওয়ার্কের সমস্যা বা কল ড্রপ ম্যালওয়্যার সংক্রমণের আরেকটি লক্ষণ। ফোনে ম্যালওয়্যার সংক্রমিত হলে ফোনকল করার সময় বা ইন্টারনেট ব্যবহারে বিঘ্ন ঘটে থাকে। ফলে কল কেটে যাওয়ার পাশাপাশি নেটওয়ার্কের সমস্যাসহ দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না।
বিভিন্ন অ্যাপ ডাউনলোডের সময়ই ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ফোনের মাইক্রোফোন, কল লগ, ক্যামেরাসহ বিভিন্ন তথ্য ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে নেয়। তবে ম্যালওয়্যারযুক্ত অ্যাপগুলো গোপনে এসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করতে থাকে। ফোনের সেটিংসের প্রাইভেসি অপশনে প্রবেশ করে অ্যাপ পারমিশনে ক্লিক করলেই কোন কোন অ্যাপ ফোনের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছে, তা জানা সম্ভব। এখানে কোনো অপরিচিত অ্যাপের নাম দেখা গেলে বুঝতে হবে ফোনে ম্যালওয়্যার রয়েছে।
ম্যালওয়্যারযুক্ত অ্যাপগুলো ফোনের পটভূমিতে চালু থাকার পাশাপাশি সংগ্রহ করা তথ্য নিয়মিত ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠাতে থাকে। ফলে ব্যবহারকারীদের অজান্তেই মোবাইল ডেটা বেশি খরচ হয়। ইন্টারনেট ব্যবহার না করলেও যদি মোবাইল ডেটা খরচ হতে থাকে, তবে বুঝতে হবে ফোনে ম্যালওয়্যার রয়েছে।