প্রিয়জনের মৃত্যুর পর তাঁর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার অ্যাকাউন্টের কী করবেন

ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত ব্যক্তিকে স্মরণের ব্যবস্থা আছে
ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত ব্যক্তিকে স্মরণের ব্যবস্থা আছে

প্রিয়জন বা কাছের আত্মীয়ের মৃত্যুতে স্বজনেরা শোকাহত হন। এ সময় তাঁরা গভীর শোকের মধ্য দিয়ে দুঃসহ সময় পার করেন। প্রযুক্তির এই যুগে প্রায় প্রত্যেকেরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থাকে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট আছে, এমন কারও মৃত্যুর পর স্বজনেরা হয়তো তাৎক্ষণিক সেটি মনে রাখেন না। কিন্তু মৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট দিয়েও কেউ কেউ ফায়দা লুটতে পারে। তাই প্রিয়জনের মৃত্যুর পরই তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এখন সত্য এটাই যে আমাদের যাপিত জীবনে প্রিয়জন বা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মৌলিক পরিবর্তন এনেছে। অনেকেই এখন মুঠোফোনের মাধ্যমে জীবন যাপন করেন। তাই কেউ যখন মারা যান, তখন পেছনে ফেলে যান বিস্তৃত ডিজিটাল পদচিহ্ন, যা মুছে ফেলা বা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া কঠিন। প্রিয়জন হারানোর দুঃসহ দিনগুলোয় কেউ হয়তো সেগুলো ব্যবহার করে জীবনকে আরও দুঃসহ করে তুলতে পারে।

আচরণগত মনোবিজ্ঞানী এবং হিপনোথেরাপিস্ট দীপ্তি টেইটের মতে, কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং এর প্রভাব নেতিবাচক ও ইতিবাচক দুটোই হতে পারে। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইতিবাচক হতে পারে এবং ব্যাপক নেতিবাচকও হতে পারে। কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে হয়তো বন্ধুতালিকায় থাকা কারও মৃত্যুর বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়া তেমন কোনো উপকারী বিষয় নয়। কিছু লোকের ক্ষেত্রে আবার জরুরি। আবার মৃত ব্যক্তিকে কে কীভাবে স্মরণ করল, সেটিরও আছে রকমফের। তবে কেউ চাইলে নিজের মৃত্যুর আগেই তিনি কীভাবে মনে থাকবেন, তার সীমারেখা টানতে পারেন।

কারও মৃত্যুর পর তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার পাওয়া খুব কঠিন এবং পাওয়ার পর সেটি আবেগের জায়গা থেকে খুব দমবন্ধকর হতে পারে। অধিকাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন ব্যবহারকারীকে তাঁর মৃত্যুর পর কে তাঁর অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করবে, তা নির্ধারণের সুযোগ দেয়। আবার কোনো কোনো মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের সুযোগ না দিলেও অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার অনুরোধ জানাতে বন্ধু–স্বজনকে সুযোগ দেয়। প্রিয়জনের মৃত্যুর পর কোন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টের বেলায় কী পদক্ষেপ নিতে হবে, তা জেনে নেওয়া যাক।

ফেসবুক

ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ডান পাশে ওপরের দিকে থাকা প্রোফাইল ছবিতে চেপে সেটিংস অ্যান্ড প্রাইভেসি নির্বাচন করে সেটিংসে চাপতে হবে। এবার জেনারেল প্রোফাইল সেটিংসের নিচের মেমোরিয়ালাইজেশন সেটিং চাপুন। চুজ আ ফ্রেন্ডে তালিকায় থাকা প্রিয়জনের নাম লিখুন এবং অ্যাড চাপুন। কোনো কারণে নির্বাচিত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকেও যোগ করা যাবে। ব্যবহারকারীর মৃত্যুর পর প্রোফাইল ‘মেমোরিয়ালাইজড’ হয়ে গেলে নির্বাচিত ব্যক্তির কাছে নোটিশ চলে যাবে।

টুইটার

টুইটার নিরাপত্তাজনিত কারণে পরিবারের সদস্য বা বন্ধুকে মৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার অনুমোদন করে না। তাই স্বজনের মৃত্যুর পর তাঁর অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার অনুরোধ করা যায়। এ জন্য মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য, অনুরোধকারীর আইডির অনুলিপি এবং মৃত ব্যক্তির মৃত্যুসনদের একটি কপি লাগবে।

ইনস্টাগ্রাম

মৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট মেমোরিয়ালাইজ বা মুছে ফেলার সুযোগ দেয় ইনস্টাগ্রাম। অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো ইনস্টাগ্রামেও মৃত্যুসনদ জমা দিতে হবে। কারও অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার বা মেমোরিয়ালাইজের অুনরোধ করতে ইনস্টাগ্রাম একটি ফরম সরবরাহ করে। এই ফরম পূরণ করে অ্যাকাউন্টটি মুছে ফেলার বা মেমোরিয়ালাইজের অনুরোধ করতে হয়।

সূত্র: ডেইলি মেইল